হালদা বেড়িবাঁধ নির্মাণে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে

137

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেছেন, হালদা বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে যাদের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও কৃষি জমি থেকে মাটি খনন করা হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। প্রায় ২৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য রাউজান ও হাটহাজারী অংশে হালদা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের শতকরা ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের মধ্যে ১২ কিলোমিটার নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরেই কাজ শেষ হবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, জনস্বার্থে অগ্রাধিকার দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে হালদার জন্য সব কিছু করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হালদা পরিদর্শনে এসে হলদা প্রকল্প পরিদর্শন, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় অধিবাসীদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে শেষে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী শামীম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন। হালদা প্রকল্পের কারণে জনস্বার্থ যাতে ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে সজাগ থাকতে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের একমাত্র কার্প জাতীয় মা-মাছের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর বেড়িবাঁধ ও নদী ভাঙণের কারণে প্রতিবছর নদীর পাড়ের ফসলী জমির ফসল নষ্ট হয়। পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢল লোকালয়ে প্রবেশ করে বাড়িঘর ও বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। এমনকি বসত ঘরে বন্যার পানি ঢুকে মানুষের ক্ষতি হয়। প্রধানমন্ত্রী জনগণের ক্ষতির কথা চিন্তা করে প্রাথমিকভাবে হালদা প্রকল্পের কাজ শুরু করেন। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মিত হলে নদীর পাড়ের লোকজন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে। তাই প্রকল্পের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
হাটহাজারী উপজেলার উত্তর মাদার্শা রামদাশ মুন্সিরহাট সংলগ্ন এলাকায় মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এ কে এম সামশুল করিম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিবেন্দু খাস্তগীর, প্রধান প্রকৌশলী মীর মোশারফ হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী স্বপন কুমার বড়ুয়া, প্রকল্প তত্ত্বাবধানকারী লে. কর্ণেল রুমিও নাওরিন খাঁন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাহাজাদা মহিউদ্দিন ও মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুল আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমীন, ভাইস-চেয়ারম্যান নুরুল আলম বাসেক, ইউপি চেয়ারম্যান যথাক্রমে মঞ্জুর হোসেন চৌধুরী মাসুদ, সরোয়ার মোরশেদ তালুকদার, আবদুল মজিদ, আবু বক্কর সিদ্দিক এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্পের কারণে এলাকাবাসীর ক্ষয়ক্ষতির কথা জনপ্রতিনিধিরা মন্ত্রীর সামনে তুলে ধরলে তার জবাবে উপমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করছেন। জনগণের অসুবিধা হয় এমন কোনো কাজ সরকার করবে না। এরপরও তিনি সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের এলাকাবাসীর সমস্যার কথা উপজেলা চেয়ারম্যানের নিকট লিখিতভাবে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে এসব সমস্যা সমধানে উদ্যেগ গ্রহণ করবে বলে জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয়দের অনুরোধে বেড়িবাঁধের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে সৌরবাতি (সড়কবাতি) স্থাপনের জন্য তিনি আশ্বাস প্রদান করেন। হালদার তীর ভাঙন রোধে নদীতে জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ে কোনো ক্ষতি হলে তা খতিয়ে দেখা হবে।
এর আগে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোরের কর্মকর্তা উপমন্ত্রীকে প্রকল্পের অগ্রগতি তুলে ধরেন। এরপর উপমন্ত্রী হাটহাজারী উপজেলা চেয়ারম্যান, নদী কুলের স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দসহ স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ ও অভিযোগ মনোযোগ দিকে শোনেন।
প্রকল্পের কাজ করার সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেই কাজ করা উচিৎ বলে জানান উপমন্ত্রী। পরে তিনি উপস্থিত সকলকে সাথে নিয়ে হলদা প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেন।