হাটের চেয়ে অনলাইনে কোরবানির পশুর দাম কম

111

সাধারণ পশুর হাট থেকে অনলাইনে তুলনামূলক কমদামে এবার বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশু। ডিএনসিসির ডিজিটাল হাটসহ প্রায় অর্ধশতাধিক অনলাইন সাইট থেকে বিক্রি হচ্ছে কোরবানির গরু।
অনেকের ধারণা ছিল ঢাকার গরুর হাটগুলো শুরু হলে অনলাইনে বেচাকেনা কমে যাবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সাধারণ হাটের চেয়ে ই-কমার্স শপগুলোতে দাম কম বিধায় হাট চালু হওয়ার পর ই-কমার্স শপগুলোর বেচাকেনা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এমন তথ্য জানিয়েছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)।
ই-ক্যাবের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, ‘আমরা আসলে ক্রেতাদের সামর্থের কথা বিবেচনা করে গরু সংগ্রহে জোর দিয়েছি। আমাদের যারা খামারি ও উদ্যোক্তা রয়েছেন তাদেরকে আমরা একটা মূল্যসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছি। ফলে দাম বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। আমাদের এই মূল্যসীমা সারাদেশে পশুর বাজারের ওপর প্রভাব ফেলেছে। এটা একটা ইতিবাচক দিক। এই মূল্যসীমার কারণে এবারে গরুর দাম বাড়াতে পারবেনা অন্যরা।’
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ শাহ ইমরান বলেন, আমাদের বেশিরভাগ গরুই ডিজিটাল স্কেলে ওজন মাপা। সুতরাং এখানে কোনো প্রতারণার সুযোগ নেই। ডিএনসিসির ডিজিটাল হাট ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য একটা আস্থার জায়গা তৈরি করেছে।’
ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস দারাজের হেড অব ইকুইজিশন সাইমুন সানজিদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের বেশকিছু মার্চেন্ট থেকে বাছাই করে আমরা শুধু ন্যায্যমূল্যে যারা গরু দিতে পারবে তাদের কাছ থেকে গরু নিচ্ছি। ফলে আমরা গরুর দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রাখতে পেরেছি।’
গ্রামীণফ্রেন্ডস এর সিইও জুনায়েদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা কোরবানির পশু হোম ডেলিভারির দায়িত্ব নিয়েছি। ডিজিটাল হাটের ইনভয়েসে গরুর ছবি দেয়া রয়েছে। ক্রেতারা গরু ডেলিভারি নেয়ার সময় অবশ্যই সব তথ্য মিলিয়ে নিতে পারবেন। অনলাইন হাট হলেও ক্রেতাদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে সবকিছু ঠিক করা হয়েছে।’
গরুহাট ডটকমের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ শাহীন বলেন, ‘আমরা প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে গরু কিনছি। ফলে একদিকে কৃষক উপকৃত হচ্ছে অন্যদিকে ক্রেতারা সাধ্যের মধ্যে সেরা গরু পাচ্ছে। উপরন্ত অনলাইনে হাসিল না থাকার কারণে ক্রেতারা আরো বেশি উৎসাহিত হচ্ছে। করোনার ব্যাপারতো আছেই। ’
এ প্রসঙ্গে দেশীগরুবিডি’র প্রধান নির্বাহী টিটু রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রথাগত হাটের সঙ্গে পার্থক্য গড়তে হলে অবশ্যই দাম এবং মান দুটোকে প্রাধান্য দিতে হবে। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি। ডিজিটাল হাট যে দামসীমা নির্ধারণ করেছে আমরা তারচেয়ে কম দামে অনলাইনে গরু বিক্রি করছি। ফলে প্রতিদিন আমাদের বিক্রির হার বাড়ছে।’
অনলাইনে কোরবানির পশুর সঙ্গে নতুন মাত্রা যোগ করেছে স্লটারিং সেবা। ডিএনসিসি ও ই-ক্যাবের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত www.digitalhaat.net এ পাওয়া যাচ্ছে এই সেবা। এর মধ্যে রয়েছে গরুর স্বাস্থ্য ও ওজন পরীক্ষা, ইসলামী বিধান অনুযায়ী গরু জবাই, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাংসকাটা, গরুর ভ‚ড়ি পরিষ্কার, মাংস, পায়া, কলিজা, মগজ ইত্যাদি ৪ কেজির নিরাপদ প্যাকে করে দ্রæত সময়ের মধ্যে বাসায় পৌঁছে দেয়া। এতে অন্যান্য সহযোগিতায় রয়েছে আইসিটি ডিভিশন ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশন।
ডিএনসিসির ডিজিটাল হাটের সঙ্গে যেসব অনলাইন শপ যুক্ত হয়েছে যেগুলো হলো দারাজ, ইভ্যালি, আজকেরডিল, গরুহাট, কোরবানিহাট, দেশীগরু, সবজিবাজার, গ্রামীণফ্রেন্ডস, জারিফা বাণিজ্যালয়, আহনাফ এগ্রো, বিডিসেল, ই-সদাই, রেইনফরেস্ট, যাচাই, আনন্দমেলা, ঢাকা বস, ঢাকার দোকান, ফাম এগ্রো, ফ্যামিলি বাজার, পরানবাজার, ভিআইডি বাজার, হাংরি নাকি, একশপ, ফুড ফর নেশন, ফ্রেসবিঙ্গার, হাম্বাফার্ম, হাম্বাহাম্বা ডটকম, নন্দনা, বিশালহাট, উডল্যান্ড, জিনিসমার্ট, শপআপ, সওদাগর, সেরাবাংলা৬৪, সবকিছু, সাদিক এগ্রো, খাটি, প্রিয়শপ, পারমিদা, প্রগা এগ্রো, অনলাইন মুদি, কাজী টেকনোলজি ইত্যাদি।