হাটহাজারীর চারিয়া মাঠে জোড় ইজতেমা শুরু

98

আগামী বছর জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণ করবেন ৩ চিল্লার সাথী নোয়াখালীর জেলার চাটখিল উপজেলার ষাটোর্ধ্ব মাহ্ফুজুল হক। তাই সাথী ভাইদের সাথে প্রথম বারের মতো হাটহাজারীর ৩ নম্বর মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া গ্রামে তিন দিনব্যাপী জোড় ইজতেমায় এসেছন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে এসে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান শোনা, নামাজ আদায়, তাসবিহ-তাহলিল ও জিকিরে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। শুধু মাহ্ফুজুল হক নন, এভাবে শীত উপেক্ষা করে লাখো মুসল্লি উপস্থিত হয়েছেন জোড় ইজতেমা ময়দানে। এছাড়া ভারত, পাকিস্তানসহ বিশ্বের নানা দেশ থেকে এসেছেন অনেক মেহমান।
সরেজমিন দেখা গেছে, জোড় ইজতেমার প্রথম দিন শুক্রবার হওয়ায় জুমার নামাজ আদায় করতে ধর্মপ্রাণ লাখো মুসল্লির ঢল নামে। সকাল থেকে দলে দলে তারা জড়ো হন ইজতেমা মাঠে। জুমার নামাজে ইমামতি করেন ঢাকার কাকরাইল মসজিদের খতিব মাওলানা হাফেজ যোবায়ের আহমেদ।
ইজতেমা কমিটির সদস্য মেখল মাদ্রাসার সিনিয়ির শিক্ষক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজী বলেন, জোড় ইজতেমায় দেশের ১৫টি জেলার ১ চিল্লা, ৩ চিল্লা ও সাল দেয়া আলমী শূরার তাবলিগী সাথীরা প্রায় ৭০ জন আমিরের নেতৃত্বে এবং বিভিন্ন মাদ্রাসাছাত্রসহ লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে অংশ নিয়েছেন। এতে বিশ্ব ইজতেমার সফলতার জন্য পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা দেওয়া হবে।
তিনি জানান, ২০১৮ সালে ১ ডিসেম্বর টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে জোড় ইজতেমাকে কেন্দ্র করে মাওলানা সা’দ আহমাদ কান্ধলভী ও মাওলানা যোবায়ের আহমেদ পন্থীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এরপর সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথম বারের মত হাটহাজারীতে এ আয়োজন হচ্ছে। মূল মাঠে অবস্থানের জন্য উত্তর-দক্ষিণ প্রায় ১২ লক্ষ বর্গফুট খোলা জায়গায় বিশালাকৃতির প্যান্ডেলসহ আশেপাশে প্রায় ৫ লাক্ষাধিক মুসল্লির অবস্থান নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় লাক্ষাধিক মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন। তবে আজ শনিবার ও আগামীকাল রবিবার আরও বেশি মুসল্লি অংশ নিতে পারে।
জানা গেছে, শুক্রবার ফজরের নামাজের পর ঢাকার কাকরাইলের মুরব্বি মাওলানা আব্দুল বারের আমবয়ানের মধ্যদিয়ে জোড় ইজতেমা শুরু হয়। বয়ান ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলে। এরপর শুরু হয় মুসল্লিদের মধ্যে তালিম। এ সময় প্রতিটি গ্রূপে ২৫-৩০ জন করে তালিমে অংশ নেন। জুমার নামাজের পর আলমী শূরার তাবলিগ জামাতের চট্টগ্রাম জিম্মাদার ও হাটহাজারী মাদ্রাসার মুহাদ্দিস আল্লামা মুফতী জসিমুদ্দীন বয়ান করার কথা ছিল।
এছাড়া আছর, মাগরিব ও এশার নামাজের পর তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বিরা ঈমান, আমল, আখলাক, ইহকাল ও পরকালসহ ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে বয়ান করেন।
হাটহাজারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাসুদ আলম জানান, ইজতেমার নিরাপত্তায় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বিকচিত্র পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। মুসল্লিদের যাতায়াত নির্বিঘœ করতে হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি মহাসড়কে পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ রাখা হয়েছে। যারা অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছেন।