সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পটিয়ায় শ্যালক ও দুলাভাইয়ের দাফন সম্পন্ন

47

পটিয়ায় সোমবার রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শ্যালক রফিকুল ইসলাম আরজু (৩০) ও দুলাভাই মোহাম্মদ শাহজাহানের (৪৫) দাফন গতকাল মঙ্গলবার সম্পন্ন হয়েছে। তাদের মধ্যে আরজু ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের প্রধান শাখায় অভ্যর্থনা বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তিনি পটিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জহির আহমদের পুত্র। এছাড়া আরজুর দুলাভাই শাহজাহান পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের সুচক্রদন্ডী গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মালেকের পুত্র। তিনি ছিলেন পেশায় পল্লী চিকিৎসক।
গতকাল দুপুরে দু’জনের মরদেহ হাসপাতাল থেকে দু’টি এম্বুলেন্সে করে বাড়িতে আনা হয়। এ সময় স্বজনদের কান্নায় আকাশ ভারী হয়ে উঠে। এরপর শাহজাহানের মরদেহ নেওয়া হয় সুচক্রদন্ডী গ্রামের নিজবাড়ির আঙ্গিনায়। কিছুক্ষণ পর আবার আনা হয় কাগজিপাড়ার শ্বশুর বাড়ি। এরপর দু’জনকে নেওয়া হয় কাগজি পাড়ার আমান আলী জামে মসজিদ মাঠে। সেখানে বাদে আসর জানাজা শেষে দু’জনের দাফন সম্পন্ন হয়।
পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে লাশ বিনা ময়নাতদন্তে দাফনের আবেদন করলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অনুমতি দেন।
উল্লেখ্য, গত সোমাবার রাত সাড়ে ১০ টায় পটিয়ায় পণ্যবাহী একটি ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী শ্যালক ও দুলাভাই একটি পুকুরে পড়ে তলিয়ে যান। স্থানয়ীরা তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাদের মৃত ঘোষণা করেন। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান মহাসড়কের পটিয়ার আমজুরহাট এলাকার স্বপ্নপুরী কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্বজনরা জানান, ৬ বোনের একমাত্র ভাই আরজু। কোরবানির ঈদের ছুটি শেষে সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় ট্রেনযোগে তার ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল। আরজুর দুলাভাই শাজাহানসহ মোটরসাইকেল নিয়ে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে যাওয়ার জন্য বের হন। আর সড়কেই তাদের প্রাণ কেড়ে নেয় একটি ট্রাক।
আরজুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ভিড় করছে গ্রামের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজন। আরজুকে গোসল করাতে বাড়ির আঙ্গিনায় নিয়ে যান পিতা জহির আহমদসহ স্বজনরা। এরপর পুত্রশোকে কাতর পিতা বাড়ির আঙ্গিনায় বসে পুত্রের শৈশবকালের বিভিন্ন স্মৃতির কথা লোকজনের কাছে বর্ণনা করেন। আসরের আজানের পর দুটি খাটিয়া করে দু’জনের মরদেহ আমান আলী মসজিদ মাঠে জানাজার জন্য নেওয়া হয়। জানাজা শেষে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।
আরজুর অপর দুলাভাই মোহাম্মদ ফয়সল জানান, ব্যাংকে চাকরি পেয়ে অভাবের সংসারের হাল ধরেন আরজু। গত রবিবার তার সাথে আরজুর শেষ কথা হয়। সে সময় আরজু তার মনের ইচ্ছের কথা বলেন। আরজু তাকে বলেন, তার ছোট অপর তিন বোনকে ভালো ঘরে বিয়ে দেবেন। মা-বাবার দুঃখ দূর করবেন। কিন্তু তার এ স্বপ্ন আর পূরণ হল না।