স্মৃতির ক্যানভাসে রমজান আলী মামুন

38

বাংলাদেশ শিশু সাহিত্যে অঙ্গণে আলী মামুন পরিচিত ও অবিদিত এক নাম। ছড়া সাহিত্যে সমুজ্জ্বল তারকা হিসেবে দীর্ঘ তিন দশকের অধিক কাজ করে গেছেন।
ছড়া, গল্প, প্রবন্ধে যার হাত চলতো সমানতালে। এইতো গেলো বছর ২৪ সেপ্টেম্বর আমাদের ছেড়ে পরপারে চলে গেছে। এতে শিশু সাহিত্যে অনেকটা শূন্যতার সম্মুখিন হয়েছে।
২৪ সেপ্টেম্বর তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। এক অমায়িক বন্ধু বৎসল মানুষটির সকল সৃষ্টিশীল কাজ সবার মনে রেখাপাত করেছে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। এই ক্ষণজন্মা মানুষটি ছিল আন্তরিক এক মানুষ।
তার লেখা ছড়া গল্পের রূপরস বিষয় বৈচিত্র ভিন্নরূপ। যা সহজেই পাঠকের মন জয় করা যায়। তার লেখা ‘নীল ডানা এক পাখি’ ‘একজন পাপিয়া’ ‘কিশোর নেমেছে যুদ্ধে’ গল্পগুলো পঠন-পাঠনে তার লেখালেখির গভীরতা সম্পর্কে আন্দাজ করা যায়।
রমজান আলী মামুন ছিলেন একজন সাহিত্যপ্রেমী, সংগঠক।
শিশু সাহিত্যে প্রতিটি শাখায় বিচরণ ছিলো তার। কি কবিতা, গল্প, ছড়া ও গানে। যাকে বলে অলরাউন্ডার।
মামুন তার জীবদ্দশায় অনেক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। স্বকাল শিশুসাহিত্য সংসদ, ছোটদের পত্রিকা ‘কথন’ এর নির্বাহী সম্পাদক পদে যুক্ত ছিলেন। ‘আলোর পাতার’ সাথে তার সম্পৃক্ততা ছিলেন।
মোটকথা সংগঠন প্রেমী এ মানুষটি আমাদের মাঝ থেকে প্রয়াত হয়ে তার সৃষ্টিকর্মকে সবার মাঝে বারে বারে কাঁদায়। ব্যক্তি জীবনে আমার সাথে সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত আন্তরিক ও বন্ধু সুলভ। যখন মন ভালো থাকতো না, তখনই আমাকে বলতো ফারুক আজ বিকেলে নেভাল টু কিংবা সী-বীচ এ নিয়ে চলো। ব্যস, অমনি আমি রাজি। ওখানে গিয়ে কবিতা কিংবা গান গাওয়ার মধ্যে সময়টুকুর মধ্যে ডুবে থাকতো। দেখে যেনো মনে হয়, কষ্টের ইন্দ্রজালে নিজেকে আবিষ্ট করে রেখেছে। কাউকে বুঝতে দিতো না, তার ভেতরের চাপা কান্না।
তখনই বুঝে নিতাম হৃদয়ের অনুভূতির কথা।
শিশু সাহিত্যের রমজান আলী মামুন তার অনুভূতির কথা অনেকটা আমাকে শেয়ার করতো। তাই জানতে পারতাম মানুষটির মনের অনেক কথা। অত্যন্ত সাদামাটা চলাফেরা সাধারণ জীবন যাপন করতো। নিজের কষ্টের কথা কাউকে বুঝতে দিত না।
আমরা কি পারিনা একজন মামুনের মতো একটি সুন্দর জীবন রচনা করতে। আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন।