স্বামীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে প্রবাসীর স্ত্রীর মামলা

3

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুবাই প্রবাসী স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রাঙ্গুনিয়ার এক গৃহবধূ। ভ্রুণ হত্যার অভিযোগে এ মামলার দায়ের করা হয়। গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম শফি উদ্দিনের আদালতে কাজী সফিউল আলম নামে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে চান্দগাঁও থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই গৃহবধূর আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রাঙ্গুনিয়ার খিলমোগল খামারিপাড়া হোসনাবাদ এলাকার কাজী সফিউল আলমের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই উপজেলার উত্তর পদুয়া পশ্চিম খুরুশিয়ার সাজু আক্তারের। বিয়ের কিছু দিন পরেই জানা যায় স্বামী পাশের গ্রামের এক নারীর প্রেমে আসক্ত। বিয়ের একমাস পরে বিদেশ পাড়ি দেন স্বামী সফিউল আলম। বিদেশ থেকে আসা-যাওয়ার মাঝে ওই গৃহবধূ সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়লে সফিউল আলমের পরামর্শে মা নুর আয়েশা, বোন তাসলিমা ও পারভিন মিলে সাজু আক্তারকে চন্দ্রঘোনায় ডা. পাপড়ি দাশের কাছে নিয়ে যান।সেখানে গিয়েই ডাক্তারকে গর্ভপাত করানোর ওষুধ দেওয়ার কথা বললে চিকিৎসক প্রথমে রাজি হননি। পরে পরিবারের লোকজন দায়িত্ব নিয়ে ডাক্তারের কাছ থেকে ওষুধ এনে রাতে গৃহবধূ সাজুকে খাওয়ালে তার শরীরে খারাপ লাগতে শুরু করে। পরদিন থেকে বমি ও রক্তক্ষরণ শুরু হলে আবারো নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসকের কাছে। চিকিৎসক দ্রুত ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য বললেও পরিবারের লোকজন তাকে বাড়ি নিয়ে আসেন। অসুস্থ্ অবস্থাতেই জ্বরের ওষুধের কথা বলে আবারো সাজু আক্তারকে ভ্রুণ হত্যার ওষুধ খাওয়ানো হয়। এভাবে তার প্রথম সন্তান পৃথিবীর আলো দেখা থেকে বঞ্চিত হয়। এখানেই শেষ নয়। বিষয়টি পরিবারের কাউকে না জানানোর জন্য চাপ দিতে থাকে সফিউল আলমের পরিবার। এভাবে বারে বারে ভ্রুণ হত্যার ঘটনা ঘটায় সফিউলের পরিবারের লোকজন। শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে গৃহবধূ সাজু আক্তার ২০২০ সালের জুলাই মাসে তার বোনের বাসা বহদ্দারহাটের ফরিদার পাড়ায় চলে আসেন। ইতোমধ্যে ২০২১ সালের ২৯ আগস্ট সাজুর স্বামী সফিউল বিদেশ থেকে এসে সাজুর বোনের বাসায় উঠেন। সাজুকে আগের সব কিছু ভুলে আবারো নতুন করে সংসার শুরু করার জন্য বললে তিনি তাতে রাজি হন। এক পর্যায়ে আবারো সন্তান সম্ভবা হন সাজু। এবারও আগের মতোই সফিউল তার স্ত্রীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলার কথা বললে সাজু তাতে আর রাজি হননি। এতেই বাধে বিপত্তি। সাজুর উপর নেমে আসে আবারো নির্যাতন। স্বামীর অত্যাচারে অসুস্থ্ হয়ে পড়া স্ত্রীকে তালাকের হুমকি দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন। এরপর কোনো উপায় না দেখে তিনি আইনের আশ্রয় নেন।