স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি অসংশোধনযোগ্য বিধান

85

চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মঈনুদ্দীন খান বাদল বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রকে সংবিধানের ৭(খ) অনুচ্ছেদ একটি মৌলিক কাঠামোরূপে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দান করেছে। এর ফলে ঘোষণাপত্রটি বাংলাদেশের সংবিধানের একটি অসংশোধনযোগ্য বিধানে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি ১৯৭১ সালেই অনেক বিষয়ের নিষ্পত্তি করেছে। অনেক ঐতিহাসিক বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে এই ঘোষণাপত্রটিতে। তারপরও রাজনৈতিক কারণে অত্যন্ত ন্যক্কারজনকভাবে আমাদের ঐতিহাসিক সত্যগুলোকে নিয়ে বিতর্কের জন্ম দেওয়া হয়েছে। যেমন, গণহত্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বিষয়ে মিথ্যা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এই সকল বিষয়ে ১৯৭১ সাল থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি ইতিহাসের সাক্ষ্য হয়ে আছে।
তিনি আরও বলেন, এই স্বাধীনতার ঘোষণাটি বাংলাদেশের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল হিসেবে সাংবিধানিকভাবে আমাদের সংবিধানের অন্তর্গত হয়েছে। নিঃসন্দেহে এই স্বাধীনতার ঘোষণা আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক দলিল। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল তারিখে মুজিবনগর সরকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারি করে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের একটি ঐতিহাসিক দলিল। বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫০(১) অনুচ্ছেদ এবং চতুর্থ তফসিলে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের একটি ক্রান্তিকালীন অস্থায়ী বিধান হিসেবে সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত হবে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি এখন সম্পূর্ণ আকারে বাংলাদেশের সংবিধানে সংযুক্ত করা হয়েছে (পঞ্চম তফসিল)।
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ৪৮তম বার্ষিকী উদযাপন এবং ঐতিহাসিক দলিলের প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান, জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. শফর আলী, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাফর আহমদ, সুপ্রিম কোর্টের তরুণ আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার এস.এম কফিল উদ্দীন, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি চট্টগ্রাম জেলা সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মইনুদ্দিন।
সংগঠনের জেলা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রেখা আলম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. অলিদ চৌধুরী, হাবিব উল্ল্যা চৌধুরী ভাস্কর, জাবেদ সুমন, আবু সাদাত মো. সায়েম, এম.এ মান্নান শিমুল, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আলম খান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফারুক চৌধুরী, মিথুন মল্লিক, মো. সাহাব উদ্দিন, অসীত বরণ বিশ^াস, অর্থ সম্পাদক মোবারক আলী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রুবা আহসান, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সুচিত্রা গুহ টুম্পা, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক প্রফেসর রেজাউল করিম, সহ-প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক রুবেল চৌধুরী, সহ-প্রকাশনা সম্পাদক সুমন চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এ.টি.এম ওসমান গণি, সহ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক ওয়াহেদ রাসেল, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক রুবেল আহমেদ বাবু, সহ-দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বেলাল হোসেন প্রমুখ।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক গৌতম চৌধুরী, অধ্যাপক সিদ্ধার্থ চৌধুরী, মো. আবুল কালাম, ওয়াহিদুল আলম শিমুল, সাজ্জাদ হোসেন, শাহদাত নবী খোকা, আলাউদ্দীন বাবু, সঞ্জয় দত্ত, দীপু বড়–য়া, ইব্রাহিম মুন্না, টিপু সিংহ, মো. হিমেল, হৃদয় নাথ, রেনুকা আকতার, আবু তালেব চৌধুরী সানী, এম. আর লিটন, লিটন দাশ, মো. মঈন উদ্দীন, সাতউল্লাহ্ চৌধুরী, সাজ্জাদ হোসেন তালুকদার, তাফহীমুল আজম আফনান, মো. হাসানুর রহমান জিয়াদ, মো. রকিব হাসান, মোস্তাক আহমদ মুরাদ, শাহেদ আমিন, ইমরান হোসেন, সজল দাশ, মো. নাছির উদ্দিন, মো. ফজলে রাব্বী মিতুল, মো. রনি, দেলওয়ার হোসেন, মোরশেদ আলম রুবেল, মো. সাজ্জাদ হোসেন শাহ্, মিনহাজ উদ্দিন, মো. সায়েম তুহিন, সাজিদ আলম রাভীদ, মো. রাজীন আবছার রাকিব, শামুসল আরেফিন সুজন, মো. আলমগীর, মো. আলী বাবু, আবদুল খালেক সোহেল, মো. ইসমাইল হোসেন শিমুল, মিঠুন বড়–য়া, আনোয়ার হোসেন, জয় চৌধুরী, অনিক মল্লিক, রবিন হালদার, মিজানুর রহমান, হাসনাত, মুন্না, অভি বড়–য়া, তোফাইল আহমদ, মো. মহিম উদ্দীন, মো. রায়হান, আবু জাহিন, নুরুল আবসার, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, মোহাম্মদ সাইফুল আলম, মো. আকতার উজ জামান, মরিয়ম আক্তার মুক্তা, রাজীব চৌধুরী, মোহাম্মদ আলী, সাজিদুল ইসলাম, ইমন শীল, অনিক চক্রবর্তী বিলাস, সাগরময় আচার্য, কুমার রাজর্ষি দাশ, সৌমেন দাশ, মো. মুজিবুর রহমান, মো. ইসমাঈল চৌধুরী, শাহরিয়ার নওশাদ, জাবেদুল ইসলাম, আবদুল হাকিম, সাইফুল ইসলাম, মো. জামশেদ, মোবারক হোসেন, মো. আদনান, কমরুল হাছান ফরহান, মো. নুরু, প্রাঞ্জল নাথ, মো. কামাল, মো. মিজানুর রহমান, ইফতেখার শিবলু, রাশেদ চৌধুরী, এস.এম হুমায়ুন কবির, নাছির উদ্দিন কুতুবী, আবদুল্লাহ আল নোমান, মো. আবু সুফিয়ান, মো. আবদুল কাদের, শৈবাল দাশ, গৌরব চৌধুরী, মো. নুরুল মোস্তাফা, মো. রাফি, এম.এ জাহেদ পলাশ, ফাহিম আল শাহরিয়ার, রুবেল দত্ত, রায়হান, আবু জাহিন মোহাম্মদ নওশিন, মো. মহীম উদ্দীন, মো. কায়সার, আব্দুল্লাহ হারুণ, মো. মোশাররফ, আনিসুর রহমান আলভী, শান্ত কর্মকার, রবিন দে, রুদ্র নাথ, জাফর, শোয়াইব প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা শওকত বাঙালি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র দিবস পালনের মধ্য দিয়ে আসুন আমরা ইতিহাস বিকৃতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করি। আমাদের রাষ্ট্র এক, মানচিত্র এক, পতাকা এক, তাহলে আমাদের ইতিহাস ভিন্ন হবে কেনো? বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত স্বাধীনতার ওপর দাঁড়িয়ে আমরা যে মহান মুক্তিযুদ্ধে লড়েছি, যেই সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখছি, সেখানে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রকে অস্বীকার করা মানেই হলো সংবিধানকে লঙ্ঘন করা। আর বাংলাদেশ সংবিধানের ৭(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নুসরাত রাফির আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ১ মিনিট নীরবতা পালন এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ফাঁসি দাবি করা হয়। বিজ্ঞপ্তি