‘স্পর্শকাতর বিষয় সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে ইমরানকে’

52

পাকিস্তানের নতুন সরকারকে নিয়ে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিনকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, নতুন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বে সমৃদ্ধির পথে হাঁটবে ইসলামাবাদ। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার ‘স্পর্শকাতর’ বিষয়গুলোর সমাধানে ইমরানকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন তিনি। শেখ হাসিনা মনে করে, সার্ক কার্যকরে ইমরানকে সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
২০১৬ সাল থেকে স্থগিত রয়েছে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সংগঠন সার্ক-এর শীর্ষ সম্মেলন। ওই বছর নভেম্বের পাকিস্তানে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে তা বাতিল হয়ে যায়।
সার্কের চার্টার অনুযায়ী, সার্কভুক্ত দেশের কোনও একটি দেশ এই শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত হতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করলে, তা এমনিতেই স্থগিত হয়ে যায়। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের জের ধরে পৃথক পৃথক সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ও ভারত সম্মেলনে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর ২০১৮ সালেও সম্মেলন হয়নি। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
২০১৯ সালের সার্ক সম্মেলনের ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি নিশ্চয় জানেন, সার্কে আমরা দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে কোনও আলোচনা করতে পারি না। ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের কিছু সমস্যা আছে। আর আমদের কথা বলতে গেলে বলবো, আমরা এখন স্বাধীন দেশ। আমাদের নিজস্ব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আছে। কিন্তু আমার কাছে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ সার্ক কার্যকরে পাকিস্তানের আন্তরিক ও ইতিবাচক পদক্ষেপ প্রত্যাশা করেন তিনি।৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনের আগে ভারতীয় স¤প্রচারমাধ্যম টাইমস নাও-কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারেও স্থগিত হওয়া সার্ক সম্মেলনে অংশ না নেওয়ার ব্যাপারে কথা বলেছিলেন শেখ হাসিনা। তিনি জানিয়েছিলেন, ভারতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নয়, একান্তই নিজস্ব সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ সম্মেলন বর্জন করেছে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ মনে করে সার্ক অঞ্চলের চলমান পরিস্থিতি আপাতত সম্মেলনের জন্য সহায়ক নয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) বাংলাদেশের কাছে সুনির্দিষ্ট সংবেদনশীলতার প্রশ্ন, যেখানে পাকিস্তান আমাদের বিচার প্রক্রিয়ার বিভিন্ন দিক নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছে। বিষয়টি তারা তাদের পার্লামেন্টেও তুলেছে। তারা অবাঞ্ছিত কিছু মন্তব্যের মাধ্যমে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ শুরু করে। এতে আমরা আহত হয়েছি, যেহেতু বিষয়টি আমাদের অভ্যন্তরীণ।’
সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যকার স্পর্শকাতর বিষয়ের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন এটা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বিষয় যে, তিনি কীভাবে সামনে অগ্রসর হবেন সমস্যাগুলির সমাধানে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় ইমরান খানকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আমি ইমরান খানকে অভিনন্দন জানাই। একজন ক্রিকেট খেলোয়াড় হিসেবে আমি তাকে পছন্দ করি। তিনি খুব ভালো ক্রিকেট খেলতেন। সবসময় ছক্কা মারতেন। এখন আমি দেখার অপেক্ষায় আছি, তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কী করেন।’