স্থানীয়দের ভিটা উচ্ছেদ করে এনজিও’র স্থাপনা!

28

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেন রোহিঙ্গারা। তাদের জন্য অনেক ত্যাগ করেন স্থানীয় হতদরিদ্র ও বৃদ্ধ জাফর আলম। এরপরও রেহাই পাননি তিনি। এখন তার বসতভিটার ২০ শতক জায়গায় এনজিও’র স্থাপনা নির্মাণ করতে ক্যাম্প প্রশাসন তার নির্মাণাধীন ঘর ভেঙে দিয়েছে। এ নিয়ে বর্তমানে তিনি স্ত্রী, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন যাপন করছেন।
স্থানীয়রা জানান, তারা কয়েক যুগ আগে থেকে শফিউল্লাহকাটায় বসতঘর নির্মাণ করে বাস করছেন। সেই ঘরটি বড় করতে এর সাথে তিনি নতুন কক্ষ নির্মাণ করছিলেন। ৩ মাস আগে তৎকালীন ক্যাম্প ইনচার্জ মাহাফুজুর রহমান স্বাক্ষরিত অনুমতির ভিত্তিতে সেখানে পাঁকা স্থাপনা নির্মাণে কাজ শুরু করে। কিন্তু গত ১৬ মে ক্যাম্প ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ কোন কথাবার্তা ছাড়া লোকজন দিয়ে জাফর আলমের নির্মাণাধীন ঘরের দেয়াল গুঁড়িয়ে দেয়। এ সময় জাফর আলম বাঁধা দিতে গেলে তাকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ওই সময় তাকে মারধর না করতে তার মেয়ে রুনা ইয়াসমিন (নবম শ্রেণির ছাত্রী) ক্যাম্প ইনচার্জের পায়ে ধরে অনুরোধ করেন। এরপর রুনা ইয়াসমিনকেও মারধর করা হয়। তার হাতে, পায়ে ও বুকে আঘাত করা হলে তিনি গুরুতর আহত হন।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে কয়েকদিন চুপ থাকে ক্যাম্প প্রশাসন। কিন্তু গতকাল বুধবার সকাল থেকে জাফর আলমের জায়গায় তুর্কি এনজিও টিকা’র স্থাপনা নির্মাণে বিভিন্ন সামগ্রী মজুদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাফর আলমের ছেলে মো. সোহেল। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা।
পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, যতটুকু শুনেছি এনজিও টিকা’র সাথে ক্যাম্প ইনচার্জের চুক্তি হয়। এর প্রেক্ষিতে জাফর আলমের জায়গা ভাড়া দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেন ক্যাম্প ইনচার্জ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্তমানে এই এনজিও ক্যাম্প ইনচার্জকে ম্যানেজ করে এলাকায় নৈরাজ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করে গ্রামবাসীর উপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে জানতে ক্যাম্প ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার কল করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা যায়নি।