সোনাদিয়ায় শিল্পকারখানা স্থাপন না করার নির্দেশ

49

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোনাদিয়া দ্বীপে কোনো ধরনের শিল্প কারখানা স্থাপন না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। কক্সবাজারের এই দ্বীপটিতে শুধুমাত্র ইকো-ট্যুরিজম উন্নত করা হবে বলে জানান তিনি।
গতকাল রবিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ে (পিএমও) ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর’ এর ওপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনের সময় সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশনা প্রদান করেন। বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। খবর বাসস
তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষ (বেজা) এই শিল্প নগরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে এই পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনটি উপস্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী গভীর মনযোগের সঙ্গে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন প্রত্যক্ষ করেন এবং এই বিষয়ে বেশ কিছু নির্দেশ প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী বেজা কর্তৃপক্ষকে শ্রমিকদের আবাসন এবং একইসাথে শিল্প এবং আইটি ক্ষেত্রের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশের বিষয়ে লক্ষ্য রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। একইসঙ্গে এই শিল্প নগরকে জলোচ্ছ¡াস এবং সাইক্লোনসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প এবং বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শিল্প, কর্মসংস্থান, উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বৈচিত্র আনয়নের মাধ্যমে দ্রুত অর্থনৈতিক বিকাশকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বেজা দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর (বিএসএমএসএন)’ এর বিকাশ সাধন করছে। চট্টগ্রাম এবং ফেনী জেলার তিনটি উপজেলা মীরেরসরাই, সীতাকুন্ড এবং সোনাগাজী’র প্রায় ৩০ হাজার একর জমির ওপর বঙ্গোপসাগরের সন্দীপ চ্যানেলের তীরবর্তী ২৫ কি.মি এলাকা নিয়ে এই শিল্প নগর প্রতিষ্ঠা হচ্ছে।
এর আগে রবিবার সকালে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ত্রাণ ভ্যান খোয়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) তার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারস্পরিক সুবিধার স্বার্থে বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনামের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বিশাল জনগোষ্ঠি রয়েছে। এই জনগোষ্ঠিকে কাজে লাগিয়ে আমরা আমদের ব্যবসা-বাণিজ্যকে বৃদ্ধি করতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভিয়েতনাম বাংলাদেশিদের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান দখল করে রয়েছে এবং দুটি রাষ্ট্রই তাদের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করেছে। বাংলাদেশের জনগণ সবসময় ভিয়েতনামের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতার হাতকে প্রসারিত করেছে।
স্বাধীনের পর বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দলের ভিয়েতনাম সফরের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার বড় ছেলে শেখ কামালও ঐ প্রতিনিধি দলে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার শুভেচ্ছা প্রেরণ করেন এবং ২০১২ সালে তার ভিয়েতনাম সফরের কথাও স্মরণ করেন।
ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ত্রাণ ভ্যান খোয়া বাংলাদেশের সঙ্গে ভিয়েতনামের ব্যবসা, পর্যটন এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধিতেও গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা দুইজন দুইজনের কাছ থেকে শিখতে পারি। রাষ্ট্রদূত দুই দেশের মধ্যে বাৎসরিক ব্যবসার পরিমাণ ৮০০ থেকে ৯০০ মিলিয়ন ডলার উল্লেখ করে বলেন, আমরা একে এক বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চমকপ্রদ উন্নয়নের ভ‚য়সী প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে তার অবস্থানকালীন তিন বছরে তিনি এই প্রশংসনীয় উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছেন। এই উন্নয়নের দরুন বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তার শক্তিশালী অবস্থান করে নিয়েছে। দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভিয়েতনাম বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রদূত উভয়েই বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনামের মধ্যে আগামীর দিনগুলোতে সম্পর্ক আরো গভীর হবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।