সেন্টমার্টিনে আটকা সহস্রাধিক পর্যটক

18

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রভাবে সৃষ্ট বৈরী আবহাওয়ার কারণে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে যাওয়া এক হাজারের বেশি পর্যটক আটকা পড়েছেন বলে জানিয়েছে প্রশাসন। টেকনাফের ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথে পর্যটকবাহী জাহাজসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে বৃহস্পতিবার ও এর আগে সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে যাওয়া অন্তত এক সহস্রাধিক পর্যটক সেখানে আটকা পড়েছেন।
এদিকে মৌসুমী আবহাওয়ার কারণে গভীর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি এখন নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে বলে আবাহওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান জানিয়েছেন।
গতকাল গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে চলাচলকারি নৌযানসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের
আব্দুর রহমান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার সমুদ্র উপকূল থেকে ৭১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এটি শনিবার রাতে বা পরদিন সকালে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম উপকূল দিয়ে অতিক্রম করতে পারে’। এ সময় বাতাসে ঘন্টায়
৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিবেগের দমকা ঝড়ো হাওয়ার পাশাপাশি দেশের উপকূলজুড়ে হালকা-মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
ইউএনও বলেন, ‘টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে চলতি পর্যটন মৌসুমে চারটি পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করছে। এসব জাহাজে করে পর্যটকরা সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে গিয়েছিল। এছাড়া অন্যান্য নৌযান ও চলাচল বন্ধ থাকার কারণে সেন্টমার্টিন দ্বীপের অন্তত আট শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দারাও টেকনাফ থেকে ফিরতে পারেননি’।
এছাড়া আটকা পড়া পর্যটকদের যাতে কোনো ধরণের অসুবিধা ও দুর্ভোগে পড়তে না হয়- এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে আটকা পড়া পর্যটকদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান সাইফুল ইসলাম।
সেন্টমার্টিনের ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, গতকাল শুক্রবার সকালে আটকা পড়া পর্যটক এবং হোটেল-মোটেগুলোর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। এসব পর্যটকদের কাছ থেকে হোটেল কক্ষের নির্ধারিত মূল্যের অর্ধেক ভাড়া নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোকেও একই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে আটকা পড়া পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে নিরাপদে অবস্থান করছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলায় সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলারগুলোকে উপকূলে ফিরে আসতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান। তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে গতকাল শুক্রবার সকালের মধ্যে অধিকাংশ ট্রলার উপকূলে ফিরে এসেছে। এখনো সাগরে ৫ শতাধিক মাছ ধরার ট্রলার অবস্থান করছে। কোনো ধরণের যান্ত্রিক অসুবিধা না হলে এসব ট্রলার শনিবার সকালের আগেই উপকূলে ফিরে আসতে পারবে’। তবে এখনও পর্যন্ত সাগরে কোনো ধরণের ‘অপ্রীতিকর’ ঘটনার খবর পাননি বলে জেলা ফিশিং বোট সমিতির এ নেতা জানান।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬ পর্যন্ত গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার পাশাপাশি সাগর স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা উত্তাল রয়েছে।