সুস্বাগত ২০২০ খ্রিস্টাব্দ উন্মোচিত হোক সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

101

মহাকালের গর্ভে হারিয়ে গেল আরও একটি বছর। সেই সাথে হাজারো স্মৃতি বিশ্বাসীর মননে গেঁথে দিয়ে, বহু সুখ-দুঃখের সাক্ষী হয়ে ২০১৯ এর বিদায়ের পর নতুন একটি বর্ষের শুভাগমন হল। সুস্বাগতম খ্রিস্ট্রীয় নববর্ষ ২০২০। শান্তি, সমৃদ্ধি ও সম্ভাবনার অপার বারতা নিয়ে শুরু হলো নতুন বছর। বিশ্ববাসী প্রবেশ করল একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকের শেষের বছরে।
বিদায়ী বছরের ব্যর্থতাকে সরিয়ে, সব জরাজীর্ণ দূর করে সম্মুখপানে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ স্বাগত জানাবে আজকের দিনটিকে। আবহাওয়া বার্তায় এ শুভদিনটির খারাপ কোন লক্ষণ নেই। কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহ শেষে গতকাল থেকে তাপ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। সূর্যও কুয়াশা ভেদ করে আলো ছড়াচ্ছে। সুতরাং দিনই বলে দিবে বাকি ৩৬৪দিনের ভালোমন্দ। খ্রিস্টীয় নতুন বছরের প্রথম প্রভাতে আমাদের অগণিত পাঠক, লেখক, এজেন্ট, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। শুভ নববর্ষ। নতুন বছর সবার জীবনে শুভ হয়ে দেখা দেবে, এটাই কাম্য।
আজকের নতুন বছরের শুরুর সাথে স্বাধীনতার ৪৮ বছর পূর্ণ করে বাংলাদেশও পা ফেলল ৪৯ বর্ষে। নতুন বছর মানে নবযাত্রা। নতুন করে সকল সমস্যা, সংকট মোকাবেলা করে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পালা। নতুন বছরে, নতুন করে আশায় বুক বেঁধেছে বাংলাদেশ। নতুন স্বপ্ন দেখে শান্তি, স্বস্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধির। বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করে, টেকসই গণতন্ত্র, সুশান ও মানবিক চেতনাবোধ জাগ্রত করে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকমুক্ত সমাজ নির্মাণে সরকারের সাথে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে। চিরতরে বিনাশ করা হবে অগণতান্ত্রিক অপশক্তি, জঙ্গিবাদ, ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা ও অপরাজনীতি। দেশবাসী প্রত্যাশা করে, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও সমঝোতার সংস্কৃতি রচনায় রাজনৈতিক দলগুলো অগ্রসর হবে।
বর্তমান সরকারের সঠিক পথ ও কর্মসূচির ফলে দেশ যেভাবে দ্রæততার সাথে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে, তা থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে সম্মিলিতভাবে সবাই কাজ করবে। ধ্বংসাত্মক রাজনীতি যেন আর মাথাচাড়া দিতে না পারে সে বিষয়ে সকলেই সজাগ থাকবে। জীবনের নিরাপত্তা, সহনীয় দ্রব্যমূল্য এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে আরও এগিয়ে নিতে সবাই মিলে কাজ শুরু হোক, এটাই নববর্ষের প্রত্যয়।
বাঙালি জীবনে গ্রেগরিয়ান নববর্ষ পালনের রেওয়াজ ব্রিটিশ শাসনামল থেকে অনুসৃত হয়ে আসছে। স¤প্রতি তা বেড়েছে পরিসরে। ইংরেজি নববর্ষ হিসেবে বাঙালির কাছে পরিচিত দিবসটি পালনের ধরন সারা পৃথিবীতে প্রায় একই রকম। তবে পশ্চিমা বিশ্বে এর আনন্দটা অনেক বেশি। পশ্চিমাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাঙালিরাও নতুন আনন্দে মেতে ওঠে তথ্যপ্রযুক্তির এই প্রাগ্রসর যুগে। বহু মানুষ এদিন শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা কার্ড, এসএমএস, ফেসবুক, টুইটার, এ্যাপল এবং ই-মেইলে হাজার হাজার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। পুরনো বছর যেমনই কাটুক, নতুন বছর যেন ভাল কাটে সেই কামনা থাকে সবার মধ্যে।
সর্বশেষ আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করতে চাই, দেশকে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে আইনের শাসনের ভিত আরও মজবুত হোক। দেশের সব ক্ষেত্রে সম্মিলিত প্রয়াস। শান্তি, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য আর দেশের প্রতি অগাধ ভালোবাসায় নতুন এক বাংলাদেশ গড়ে উঠবে- এমনটি অঙ্গীকার হোক নতুন বছরের । ২০২০ সালে উন্মোচিত হোক সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত।
চলতি বছরেই শুরু হতে যাচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ। নানা আয়োজন-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বছরটি পালিত হবে দেশে ও বিশ্বব্যাপী, যাতে যোগ দিয়েছে জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা ইউনেস্কো। সে হিসেবে বছরটির তাৎপর্য গভীর ও সুদূরপ্রসারী। এর পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। সুতরাং পেছনে তাকানোর সুযোগ আর নেই। এবার কেবলই সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। জয় হোক বাঙালি জাতির, জয় হোক বাংলাদেশের।