সীমান্তে চোরাচালান রোধে সতর্ক থাকুন

36

সাতকানিয়া প্রতিনিধি
সব ধরনের লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে সীমান্তে চোরাচালান রোধে সর্বদা সজাগ থাকতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের প্রতি আহব্বান জানান রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। গতকাল সোমবার সাতকানিয়ায় বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজে (বিজিটিসিএন্ডসি) ৯৪তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ শেষে নবীন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে তিনি এ আহব্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আপনাদের চরিত্রের কঠোরতার পাশাপাশি মানবিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটাতে হবে। আপনাদের লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
এসময় রাষ্ট্রপতি দেশ ও জাতির প্রয়োজনের পাশাপাশি ভবিষ্যতে জনকল্যাণমূলক কাজে সম্পৃক্ত হতে বিজিবির নতুন সদস্যদের পরামর্শ দেন।
রাষ্ট্রপতি বিজিবি’র নবীন সৈনিকদের প্রদর্শিত কুচকাওয়াজের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে তাদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের নিদর্শন তুলে ধরার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান। বিজিবির সার্বিক উন্নয়নে বর্তমান সরকারের বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মকান্ডের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, সততা বুদ্ধিমত্তা নির্ভরযোগ্যতা আনুগত্য তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি। নবীন সৈনিকদের এসব গুণাবলী অর্জনের উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘আজ যারা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের পরিবারভুক্ত হলে তোমাদের চরিত্রে মানবিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটবে এবং লোভ লালসার উর্ধ্বে থেকে নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সবসময় সচেষ্ট থাকবে।’
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নারীদের অবিস্মরণীয় অবদানের কথা স্মরণ করে নারী রিক্রুটদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আজ নারীরা বিভিন্ন অঙ্গনে যথাযথ যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন। তোমরা দেশমাতৃকার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃপ্ত শপথ নিয়ে সৈনিক জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তোমরা বিজিবি’র সার্বিক কর্মকান্ড পরিচালনায় আরও গতিশীল ভূমিকা রেখে বাহিনীর সুনাম সুখ্যাতি বৃদ্ধিতে সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে নিরলসভাবে কাজ করবে। তোমরাও অন্যান্য বাহিনীর নারী সৈনিকদের মতো কর্মক্ষেত্রে যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রমাণে সমভাবে সার্থক হবে বলে আশা করি।’
রাষ্ট্রপতি প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে ৯৪তম ব্যাচের সেরা চৌকস রিক্রুট হিসেবে ১ম স্থান অধিকারী মঈন উদ্দিন এবং অন্যান্য বিষয়ে সেরা সৈনিকদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।
এসময় নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, প্রফেসর ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, বিভিন্ন বাহিনী প্রধানগণ এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের সেনাবাহিনী ও বিজিবি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, নবীন সৈনিকদের অভিভাবকবৃন্দ ছাড়াও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত থেকে এ সমাপনী কুচকাওয়াজ ও অন্যান্য প্রদর্শণী উপভোগ করেন। কুচকাওয়াজে প্যারেড পরিচালনা করেন ৯৪তম রিক্রুট ব্যাচের অফিসার ইনচার্জ মেজর কাজী মনজুরুল ইসলাম এবং প্যারেড এ্যাডজুটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক বেগ আব্দুল্লাহ আল মাসুম।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজে ৯৪তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। উক্ত ব্যাচে প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া মোট ৫৪৪ অন রিক্রুটের মধ্যে ৪৯৫ জন পুরুষ এবং ৪৯ জন নারী রিক্রুট ছিলেন।