সীতাকুন্ড-মিরসরাইয়ে ২০০ কোটি টাকার শিম

135

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে বিস্তীর্ণ জমিতে শিম আর শিম। শুধু ফসলী জমি নয় পাশাপাশি জমির আল, মেঠোপথ, রেললাইনের দুই পাশ থেকে শুরু করে পতিত ভূমিতেও চোখে পড়ে শিম। বেড়িবাঁধ আর পাহাড়ি ঢাল কিছুই বাদ নেই। ফুলে ফলে ভরা একেকটি শিমের ঝোপ বলে দিচ্ছে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। উত্তর ফেদাইনগরের শিমচাষি আবদুল বারিক বলেন, বংশ পরম্পরায় কাত্তিকোটা, ছুরি, পুঁটি, বাটাসহ ছয় ধরনের শিমের চাষ হয়ে আসছে সীতাকুন্ডে। মৌসুমের প্রথম থেকে শুরু করে মাঝামাঝি পর্যন্ত পরিপক্ক শিম পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়। এরপর দাম কমে গেলে কাঁচা শিমের বিচি খুলে নিয়ে বিক্রি করা হয়। যা চট্টগ্রাম অঞ্চলে ‘খাইস্যা’ নামে পরিচিত। শুকনো শিমের বিচি সারা বছরই বিক্রি হয়। খবর বাংলানিউজের
চাষি বলরাম দাশ বলেন, এখন আমার প্রতিকেজি শিম ২৫-৩০ টাকা বিক্রি করছি। দ্রুত দাম আরও কমে যাবে। তারপরও শিমচাষ বোরো ধানের চেয়ে লাভজনক। সবচেয়ে বড় কথা সীতাকুন্ডের মাটি শিমচাষের জন্য উপযোগী। সীতাকুন্ডের শিম রফতানি হলে আমরা আরও বেশি লাভবান হবো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাফকাত রিয়াদ জানান, দক্ষিণ সীতাকুন্ডে ফসলী জমি কম, শিল্প-কারখানা বেশি। উত্তর সীতাকুন্ডে চাষের জমি বেশি। শীতকালে এ উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে শাকসবজির চাষ হয়। এর মধ্যে শিমচাষই হয় প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। বিশেষ করে বারৈয়ারঢালা, নুনাচরা, বটতল, শেখপাড়া, গুপ্তাখালি, বাঁশবাড়িয়া, মুরাদপুর, সৈয়দপুর, বাড়বকুন্ড এলাকায় শিমচাষ বেশি হয়। বাকি জমিতে লাউ, বাধাকপি, ফুলকপি, মুলা, বেগুন, তিতকরলা ইত্যাদির চাষ হয়।
তিনি জানান, দেশের অন্যান্য স্থানে একই জমিতে তিনবার চাষ হয়-আউশ, আমন, বোরো। কিন্তু সীতাকুন্ডে বোরো ধানের বদলে চাষিরা শিমের চাষ করেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আমিনুল হক চৌধুরী বলেন, সীতাকুন্ডে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে শিমচাষ হয়েছে। মিরসরাইতে হয়েছে ১ হাজার হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় হেক্টর প্রতি যদি ২০ টন শিম হয় তবে ৮০ হাজার টন শিম উৎপাদন হবে এ মৌসুমে। প্রতি কেজি শিমের দাম গড়ে ২৫ টাকা ধরলে যার বাজারমূল্য দাঁড়ায় ২০০ কোটি টাকা। শিমের কাঁচা ও শুকনো বিচির দাম হিসাব করলে তা অনেক বেশি হবে।