সীতাকুন্ডে হচ্ছে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মৈত্রী’

29

মুক্তিযুদ্ধের সময় নিহত ভারতীয় সৈনিকদের স্মরণে ‘ম্যুরাল’ স্থাপন করছে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ। সীতাকুন্ডে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মৈত্রী’ নামে এ ম্যুরাল স্থাপন করা হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরের আগেই ম্যুরালের কাজ শেষ করা হবে বলে জানা গেছে। ম্যুরালটি বাংলাদেশ -ভারত মৈত্রী ম্যুরাল হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের কাজে হাত দিয়েছে জেলা পরিষদ।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী মূরাল করতে যাচ্ছি। সীতাকুন্ডে ম্যুরালটি করা হবে। নাম হবে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মৈত্রী’। একাত্তরে নিহত ভারতীয় সৈন্যদের স্মরণে এ মৈত্রী ম্যুরাল করা হচ্ছে। ড্রয়িং, ডিজাইন সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে কাজও শুরু হয়ে গেছে। আগামী ডিসেম্বরের আগেই কাজ শেষ করে বিজয় দিবসের সময় উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ভারত বাংলাদেশকে ব্যাপকভাবে সাহায্য করেছিল। বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের সময় আশ্রয় দেয়া, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, মুক্তিযুদ্ধে সেনাসহায়তা দেওয়াসহ সবধরনের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সহায়তা দিয়েছিল ভারত। মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে সীতাকুন্ডে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর বেশ কিছু সৈন্য শহীদ হন। সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ মন্দির সড়কের গজারিয়া দীঘির পাড়ের দোলপাড়ায় এই অকুতোভয় যোদ্ধাদের সমাহিত করা হয়। এতোদিন অবহেলায় পড়ে থাকা সে শহীদ সমাধিস্থানটিই হবে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মৈত্রী’। সাড়ে ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে স্মৃতিস্তম্ভটি করার প্রকল্প নেওয়া হলেও এর ব্যয় আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র মতে, ১৯৭১ সালের ১৩ ও ১৫ ডিসেম্বর পাকহানাদার বাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় সৈন্য ও মুক্তিযোদ্ধাদের শেষ যুদ্ধ হয়েছিল সীতাকুন্ডের কুমিরায়। তিন দিনে এ এলাকায় ১৩টি সম্মুখযুদ্ধ ও ৯টি গেরিলাযুদ্ধ হয়। এতে উভয়পক্ষের অনেকে হতাহত হন। বেশ কিছু ভারতীয় সৈন্য নিহত হন। এদের সীতাকুন্ড পৌরসভার রেলস্টেশন হতে চন্দ্রনাথ মন্দিরগামী সড়কের গাজারিয়া দীঘির পাড়ের দোলপাড়ায় মহন্তবাড়ির মূলফটকের সম্মুখস্থানে দাহ করা হয়। স্বাধীনতার পর ৪৬ বছর ধরে সমাধিস্থলটি অবহেলা-অযত্নে পড়েছিল। এবার সেটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার জহিরুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় কতজন সৈন্য নিহত হয়েছিলেন সে তথ্য আমরা নেয়ার চেষ্টা করছি। সঠিক ইতিহাসটি তুলে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় হাইকমিশন আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করছেন।