সীতাকুন্ডে সন্ত্রাসী হামলায় যুবলীগ নেতা নিহত

77

সীতাকুন্ডে সন্ত্রাসী হামলায় সম্রাট প্রকাশ দাউদ সম্রাট (৩৪) নামে এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। একই হামলায় মো. সাজ্জাত হোসেন (২৬) ও অমল চন্দ্র নাথ নামে আরো দুই যুবলীগ কর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার বিকালে উপজেলার পৌরসদরস্থ রেল গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সম্রাট পৌরসদরস্থ ভুইয়া পাড়া এলাকার আবুল হোসেনের পুত্র ও ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি।
এদিকে যুবলীগ নেতা আহতের বিষয়টি শুনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আওয়ামী লীগ নেতা মোফাক্করুল আলম চৌধুরী দেখতে গেলে নিহত সম্রাট গ্রুপের লোকজন তাকেও চুরিকাঘাত করে। এর পরপরই হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং আহত আওয়ামী লীগ নেতা মোফাক্করুল আলম চৌধুরীকে চমেক হাসপতালে ভর্তি করান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকালে সম্রাট ও তার কয়েকজন অনুসারী নেতাকর্মীকে নিয়ে রেল গেট এলাকা অতিক্রমকালে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা তাদের গতিরোধ করে হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসীরা তাদের হাতে থাকা ধারালো চুরি দিয়ে সম্রাট, সাজ্জাদ ও অমল চন্দ্র নাথকে এলোপাথারি কুপিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। এরপর স্থানীয়রা আহত যুবলীগ নেতাদের উদ্ধার করে সীতাকুন্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে সম্রাটকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত সাজ্জাদ ও অমল চন্দ্র নাথও চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সাজ্জাদ হোসেনের অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার পরপরই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সীতাকুন্ড থানা পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যুবলীগ নেতা সম্রাট ও শহীদ গ্রুপের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য নিয়ে আগেও অনেকবার সংঘর্ষ হয়। সম্প্রতি সম্রাট গ্রুপের হামলায় শহীদ গ্রুপের শহীদ ও তার ভাই টিটু গুরুতর আহত হয়। চমেক হাসপাতালে দুইদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে টিটু মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় দাউদ সম্রাটকে এক নম্বর আসামি করে সীতাকুন্ড মডেল থানায় হত্যা মামলা করেছিল নিহতের পিতা আবুল মুনসুর।
চমেক হাসপাতালের এএসআই মো. আলাউদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সীতাকুন্ড পৌরসদর এলাকা থেকে চুরিকাঘাতে আহত তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার সম্রাট নামে একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর দুইজনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করান। আহতদের দেখতে হাসপাতালে মোফাক্করুল আলম নামে এক লোক দেখতে আসলে নিহত সম্রাটের লোকের তাকে ছুরিকাঘাত করে। এরপর ডাক্তার তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সীতাকুন্ড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. দেলওয়ার হোসেন জানান, পূর্বের পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে সোমবার বিকালে সন্ত্রাসী সম্রাট ও সন্ত্রাসী শহিদ গ্রুপের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হামলায় এক গ্রুপের লোকজনের চুরিকাঘাতে সম্রাটের মৃত্যু হয় এবং অপর দুইজন আহত হয়। ঘটনার পর এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছি।