সিনেটর অ্যানিংয়ের মাথায় ডিম ভেঙে প্রতিবাদ

38

ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে রক্তাক্ত হামলার দায় মুসলিম অভিবাসীদের উপর চাপিয়ে বিতর্ক উসকে দেওয়া অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ফ্রেজার অ্যানিংয়ের মাথায় ডিম ভেঙে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এক তরুণ। নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড জানায়, শনিবার মেলবোর্নের মোরাবিনে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন অ্যানিং। ঠিক তার পেছনে দাঁড়িয়ে এক তরুণ মোবাইলে ভিডিও করছিল। হঠাৎ করেই ওই তরুণ বা-হাতে মোবাইল ধরে ডান হাতে অ্যানিংয়ের মাথায় একটি ডিম ভেঙ্গে দেন।
হতবাক অ্যানিং পেছনে ঘুরেই তরুণের মুখে চড় মারতে শুরু করে। দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে লোকজন ওই তারুণকে মাটিতে চেপে ধরে; অন্য একজন অ্যানিংকে সরিয়ে নেয়। শুক্রবার জুমার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের দুইটি মসজিদে বন্দুকধারীর হামলায় ৪৯ জন নিহত এবং আরও ৪৮ জন গুলিবিদ্ধ হন। অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ওই হামলাকারীর নাম ব্রেন্টন ট্যারেন্ট। যাকে ‘একজন উগ্র ডানপন্থি নৃশংস সন্ত্রাসী’ বলে বর্ণনা করেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।
ওই দিন বিকালে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে অ্যানিং বলেন, ওই হামলা অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডে ‘মুলসলমান অভিবাসীদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বাড়তে থাকা আতঙ্কের’ কথা বলছে। বিবৃতিতে কুইন্সল্যান্ডের সিনেটর অ্যানিং মসজিদে হত্যাযজ্ঞের জন্য নিউ জিল্যান্ডের অভিবাসন নীতিকেও দায়ী করেন। তিনি বলেন, “বরাবরের মতই, বামপন্থি রাজনীতিবীদ এবং সংবাদমাধ্যম যে হামলার হয়েছে তার পেছনে অস্ত্র আইন অথবা যারা জাতীয়তাবাদী মনভাব ধারণ করে তাদের দায়ী করতে ব্যস্ত হয়ে যাবে। যদিও এ সবই ফালতু কথা। “নিউ জিল্যান্ডের সড়ক রক্তে রঞ্জিত হওয়ার আসল কারণ তাদের অভিবাসন নীতি। যে নীতি মুলসমান ধর্মান্ধদের আশ্রয় প্রার্থনা করতে প্রথম পছন্দের দেশ হিসেবে নিউ জিল্যান্ডকে বেছে নেওয়ার অনুমতি দেয়।”
কড়া ভাষায় অ্যানিংয়ের বিবৃতির নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মরিসন বলেন, “অভিবাসী ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে সিনেটর অ্যানিং যে মন্তব্য করেছেন তা আতঙ্কজনক এবং কুৎসিত। অস্ট্রেলিয়ায় এ ধরনের মনভাবের কোনো স্থান নেই। নিজের মন্তব্যের জন্য তার সত্যিই লজ্জিত হওয়া উচিত। আমার সরকার কোনোভাবেই এর সঙ্গে একমত নয়।” শুক্রবারের বিবৃতির জন্য অ্যানিংয়ের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া সরকার পার্লামেন্টে তিরস্কার প্রস্তাব তুলবে বলেও জানান তিনি।