সিটি কর্পোরেশন নিয়োগপত্র পাচ্ছেন ১৯৭১ পরিচ্ছন্নকর্মী

69

নগরীকে ‘গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি’ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন শুরু করেছিলেন ‘ডোর টু ডোর বর্জ্য সংগ্রহ ও অপসারণ কর্মসূচি’। জনবলের স্বল্পতা থাকায় কয়েকধাপে প্রায় ২ হাজার পরিচ্ছন্নকর্মীকে এই কাজে নিযুক্ত করে সিটি কর্পোরেশন। প্রথমে তাদের ওয়ার্ড অফিসে ক্যাশ টাকায় দৈনিক বেতন দেওয়া হত। পরে তাদের বেতন দেওয়া হচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের অন্য সকলের মত ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে। অবশেষে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন শ্রমিক ও কর্মচারী লীগের (সিবিএ) আবেদনের প্রেক্ষিতে অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে নিয়োগপত্র পাচ্ছে এসব পরিচ্ছন্নকর্মী।
এদিকে পরিচ্ছন্নকর্মীরা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। গতকাল কেবি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগে কর্মরত সুপারভাইজারদের এক সমন্বয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এই মন্তব্য করেন। তাই তাদের কাজ কর্মে সুষ্ঠু তদারকি করা, কোন ওয়ার্ডে কতজন সেবক এবং কয়টি গাড়ি সচল তার পূূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। এছাড়াও ময়লা আবর্জনা দ্রুত সময়ের মধ্যে অপসারণের জন্য ভ্যানগাড়ির পরিবর্তে টমটম গাড়ি প্রদান করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
যতটা প্রত্যাশা নিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে ততটুকু প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। বরং নানা অভিযোগের মধ্যে এই কার্যক্রম চলছে। ডোর টু ডোর বর্জ্য সংগ্রহ অনেকটা গলির মুখেই সীমাবদ্ধ। বিভিন্ন আবাসিকে নিজের ব্যবস্থাপনায় ময়লা সংগ্রহ করা হয়। পরে সেগুলো ডাস্টবিনে রাখা হয়। সেখান থেকে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ময়লা সংগ্রহ করেন। ফলে আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের আগের মতই মাসিক টাকা দিতে হচ্ছে। অনেকে আবার কৌশল করে উন্নয়নের ফি নামে এসব চাঁদা সংগ্রহ করে। সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানিয়েছে, ২০১৬ সাল থেকে বিভিন্ন সময় ১৯৭১ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী দৈনিক বেতনে কাজ করছেন। তাদের দৈনিক বেতন ৩২৪ টাকা। সিটি কর্পোরেশনের কোনো নিয়োগ না হওয়ায় তাদেরকে শৃঙ্খলায় আনা যাচ্ছিল না। ফলে সিবিএ’র আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের অস্থায়ী নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন মেয়র। এই বিষয়ে উপ প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী পূর্বদেশকে বলেন, প্রথমে তাদের ওয়ার্ড অফিসে ক্যাশ টাকা দিয়ে বেতন দেওয়া হত। যার কারণে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠে। পরে আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মেয়র মহোদয় তাদের ব্যাংকের মাধ্যমে বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। যা তাদের ন্যায্য বেতন পেতে ভোগান্তি কমিয়েছে। এছাড়াও আমাদের সিবিএ’র আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে নিয়োগপত্র দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে সবাই একটি শৃঙ্খলায় ফিরে আসবে এবং প্রত্যাশাও পূরণ করা সম্ভব হবে।
ওই সভায় মেয়র আরও বলেন, চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কার্যক্রমের উপর নগরীর সৌন্দর্য, দৃষ্টিনন্দন ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নির্ভর করে। তাই পরিচ্ছন্ন সুপার ভাইজার, পরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে হবে। এতে রক্ষিত হবে পরিবেশবান্ধব নগর। বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আবর্জনা নিয়ে দুইটি টিজিতে কি পরিমাণ ময়লা আবর্জনা ডাম্পিং করে তার কোন সঠিক হিসেব নেই। সঠিক হিসেবের জন্য টিজি দুইটি সিসি ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত দেন মেয়র।
চসিক’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ শফিকুল মন্নান ছিদ্দিকী, উপ প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।