সাড়ে ৬ বছর পর রাঙ্গুনিয়া আ. লীগের সম্মেলন আজ

88

দীর্ঘ ৬ বছর ৭ মাস পর আজ (শনিবার) রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে হচ্ছে। সম্মেলনকে ঘিরে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ। কে হচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্ণধার-এই নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। ইতোমধ্যে এই নিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্নভাবে চলছে নানা হিসেবে নিকেশ। সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষেও কর্মী-সমর্থকদের ব্যানার, ফেস্টুনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তবে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা দলের জন্য সৎ, পরিচ্ছন্ন ও যোগ্য নেতাদের মূল্যায়ণ করার দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খলিলুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘সম্মেলন সফল করতে ইতোমধ্যে শতভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। উদ্বোধক থাকবেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। প্রধান বক্তা থাকবেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম। দুই পর্বের সম্মেলন অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে আলোচনা সভা উপজেলার ইছাখালী নূর জাহান কমিউনিটি সেন্টার মাঠে এবং দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন সফল করতে তিনি আওয়ামী লীগের সকলস্তরের নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করেন’।
জানা যায়, সম্মেলন সফল করতে গত ২৮ জুন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় একটি আহবায়ক কমিটি ও ৮টি উপকমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খলিলুর রহমান চৌধুরীকে আহবায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্বকারী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে সদস্য করা হয়। এছাড়াও সম্মেলন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা, অভ্যর্থনা, আপ্যায়ণ, মঞ্চ ও সাজসজ্জা, অর্থ, দপ্তর ও প্রচারসহ ৮টি উপকমিটি গঠন করা হয়।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২২ ডিসেম্বর উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এতে খলিলুর রহমান চৌধুরী সভাপতি ও কাজী জসিম উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে রাজনীতি থেকে কাজী জসিম উদ্দিন নিজেকে গুটিয়ে নিলে এখনো পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার। এরআগে ১৯৭৮ সালের আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি হয়েছিলেন জহির আহমদ চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক হন হাফেজ মোহাম্মদ শরীফ। এরপর ১৯৯৩ সালের সম্মেলনে জহির আহমদ চৌধুরী পুনরায় সভাপতি ও সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালের সম্মেলনে জহির আহমদ চৌধুরী তৃতীয়বারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হন এবং সাধারণ সম্পাদক হন ছাদেকুন নূর সিকদার। এই কমিটি ২০০৩ সালের মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের পর ওই মাসেই আওয়ামী লীগের পরবর্তী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে খলিলুর রহমান চৌধুরী সভাপতি ও কাজী জসিম উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। তারা ২০১২ পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছর দায়িত্ব পালনের পর ওই বছরের ২২ ডিসেম্বর সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তবে ১৯৭৮ পূর্ববর্তী রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন প্রয়াত সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সভাপতি ও সম্পাদকের দায়িত্বে থেকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়েছিলেন।
নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও মূলত সভাপতি পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে সভাপতি পদে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতৃবৃন্দের নামও আলোচনায় রয়েছে। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদেও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদারের নাম শোনা যাচ্ছে। তিনি উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে তার পক্ষে নেতা-কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। তবে এই পদেও একাধিক প্রার্থী বিভিন্নভাবে লবিং চালাচ্ছেন বলে জানা যায়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন খাঁন বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করবেন কাউন্সিলররা। সেই লক্ষ্যে উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও পৌরসভা থেকে ৩১ জন করে ৪৯৬ জন কাউন্সিলর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সকল কর্মকর্তা ও সদস্যবৃন্দ এবং উপজেলার সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ থেকে ১৫ জন কো-অপশনকৃত হিসেবে কাউন্সিলর তালিকা তৈরি করা হয়েছে।