সাড়ে চার মাসে বজ্রপাতে ‘৮১ জনের’ প্রাণহানি

62

চলতি বছরের প্রথম সাড়ে চার মাসে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে বজ্রপাতে অন্তত ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর জানিয়েছে।
এমন দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে বড় তালগাছের সুফল নেওয়ার পাশাপাশি বিকল্প পদ্ধতিতে ‘লাইটনিং অ্যারেস্টার ও লাইটনিং ডিটেকটিভ সেন্সর’ স্থাপন ও জনসচতনতার তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বজ্রপাতে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ২৫০ থেকে ৩৫০ জনের মৃত্যু হয়। এটাকে দুর্যোগ ঘোষণার পর জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ২০১৭ সাল থেকে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার; তার একটি হচ্ছে তালগাছ রোপণ।
সারাদেশে সাড়ে ৩১ লাখ তাল বীজ বপন করা হয়েছে। এগুলো বড় হতে সময় লাগবে আরও ৫-৬ বছর। সর্বত্র তালগাছের সংখ্যা বাড়লে বজ্রপাত সেখানেই হবে, ফলে এড়ানো যাবে প্রাণহানি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর মহাপরিচালক মো. মোহসীন বলেন, জানুয়ারি থেকে ১৫ মে পর্যন্ত অন্তত ৮১ জন বজ্রপাতে মারা গেছেন। বজ্রপাতের ক্ষতি এড়াতে বজ্রপাতপ্রবণ এলাকা সেন্সরের মাধ্যমে চিহ্নিত করে জনগণকে কীভাবে দ্রæত জানানো যাবে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, তালগাছ যেগুলো লাগানো হয়েছে, সেগুলো বড় হতে অনেক সময় লাগবে। অন্তবর্তী এই সময়ে বজ্রপাত থেকে রক্ষায় ৭২৩টি স্থানে লাইটনিং অ্যারেস্টার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
বজ্রপাত নিয়ে জনসচেতনা তৈরিতে কর্মরত বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডার অ্যাওয়ারনেস ফোরামের গবেষণা সেলের নির্বাহী প্রধান আব্দুল আলীম বলেন, ‘বিকল্প পদ্ধতিতে লাইটনিং ডিটেকটিভ সেন্সর ব্যবহার করে ১৫-২০ মিনিট আগে বজ্রপাত প্রবণতা এলাকার জনগণকে এসএমএস এর মাধ্যমে সতর্ক করতে পারলে ক্ষতি এড়ানো যাবে। লাইটনিং অ্যারেস্টারের মতো সফল উদ্যোগ নেওয়া গেলে বজ্রপাত প্রবণ এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব হতো।’
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ঝড় ও বজ্র বৃষ্টি হয় এপ্রিল ও মে মাসে। এ সময় ৬১ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া ঝড়ের সংখ্যা বেশি।
আবহাওয়াবিদরা জানান, বজ্রঝড়ের সময় সাধারণত ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট বজ্রপাতের ভয় থাকে। কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাত শুরুর অন্তত আধ ঘণ্টা সময় সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের তত্ত¡াবধানে ৮টি অঞ্চলে স্থানে বজ্রপাত চিহ্নিতকরণ যন্ত্র (ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, পঞ্চগড়, নওগাঁ, খুলনা পটুয়াখালী ও চট্টগ্রামে লাইটনিং ডিটেকটিভ সেন্সর) রয়েছে।
‘আমরা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ও প্রতিবেদন আকারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এ সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে থাকি। তা জনগণের কাছে পৌঁছাতে ও প্রচারণায় ব্যপক উদ্যোগও থাকতে হবে।’ খবর বিডিনিউজের