সাতকানিয়ায় মনোনয়ন দৌড়ে অর্ধ ডজন আওয়ামী লীগ নেতা

98

জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হওয়ার পর পর সাতকানিয়ায় শুরু হয়েছে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজয়ের পর বিএনপি-জামায়াত রাজনৈতিকভাবে নীরবতা পালন করলেও এক্ষেত্রে সরব রয়েছে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। নির্বাচন কমিশন থেকে উপজেলা নির্বাচনের দিনক্ষণ চুড়ান্ত করা না হলেও মার্চেই নির্বাচন হতে পারে এমন আলোচনা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে দলীয় মনোনয়নের জন্য আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার কর্মী সমর্থকরা তাদের সমর্থিত নেতাদের মনোনয়নের জন্য সামাজিক যেগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়েছেন। সাতকানিয়ার সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী, সাতকানিয়া আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডাক্তার মিনহাজুর রহমান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক গোলাম ফারুক ডলার ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ আবু ছালেহ। তারা ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সহ প্রভাবশালী নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করে নিজের মনোনয়ন নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে কেন্দ্র থেকে এখনো পর্যন্ত কোন ধরনের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মত ক্ষমতায় এসে সবেমাত্র মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেছে। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এখনো পর্যন্ত তৎপরতা শুরু হয়নি। নির্বাচনের সিডিউল ঘোষনা হওয়ার পর স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড বসে তৃনমূল থেকে নাম সংগ্রহ করে তার পর প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে। তবে যথাসময়ে উপযুক্ত নেতাদের মনোনয়ন দিবে বলে জানান তিনি। জানা যায়, দলীয় ভিত্তিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর একবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে মাত্র। এবারেই প্রথম উপজেলা নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে হবে। তাই মাঠে বিচরণের পাশাপাশি দলীয় মনোনয়নের দৌড়ে এগিয়ে থাকার প্রচেষ্টায় রয়েছে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। সূত্রে প্রকাশ ২০১৪ সালের ২৩ মার্চ গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ নির্বাচনে কারা বন্দী থাকা অবস্থায় ৬৮ হাজার ৬শ ২৭ ভোট পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী জসীম উদ্দীন। তার বিপরীতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নুরুল আফসার চৌধুরী পান ৪৪ হাজার ১ শত ৪০ ভোট। আর ২৯ হাজার ৩৩৫ ভোট পেয়ে তৃতীয় হন বিএনপির প্রার্থী অধ্যাপক শেখ মো. মহিউদ্দিন। জানা যায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মোনাফ, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডাক্তার মিনহাজুর রহমান দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক গোলাম ফারুক ডলার ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ আবু ছালেহ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। ইতিমধ্যে তাদের কর্মী সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজ নিজ সমর্থিত নেতাদের মনোনয়ন প্রত্যাশা করে স্ট্যাটাস পোস্ট দিচ্ছেন। মনোনয়নের বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুল আবসার চৌধুরী বলেন, আমি গতবার নির্বাচনে খুব কম সংখ্যক ভোটে পরাজিত হলেও র্দীঘ পাচঁ বছর সাতকানিয়াবাসীর সুখে দুখে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছি। এবারে দলীয় মনোনয়ন পেলে অবশ্যই বিজয়ী হব বলে আমার বিশ্বাস। কারণ সাতকানিয়ার মানুষ এখন আর উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে থাকতে চায় না তারা মূলস্রোতের সাথে মিলে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করতে চান। তাই আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আমার বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কুতুব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমি দলের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তৃনমুলকে সংগঠিত করেছি। আমি সাধারন সম্পাদক থাকাবস্থায় সবকটি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছে। আমি দলীয় মনোনয়ন পেলে বিজয় নিশ্চিত বলে আমি মনে করি। প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে গোলাম ফারুক ডলার বলেন, সাতকানিয়ায় আমরাই আওয়ামী লীগের বীজ বপন করেছিলাম। অনেক নেতা আছে যারা প্রতিটা ইউনিয়নের সামনের সারির নেতাদের নামও জানে না কিন্তু আমি ব্যতিক্রম। সবকটি ইউনিয়নের নেতাদের সাথে আমার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। আমি নৌকার মনোনয়ন পেলে কোন শক্তি আমার বিজয় ঠেকাতে পারবে না কারণ আমার যথেষ্ট জনসমর্থন ও পরিচিতি রয়েছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেমন প্রার্থী চান এমন প্রশ্নের জবাবে উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক থানা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, দলের পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া উচিত। কারন দলের পরীক্ষিত নেতা মনোনয়ন পেলে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করা যাবে।