সাতকানিয়ায় ছেলেধরা আতঙ্ক গুজবে ‘ঘি ঢাললেন’ শিক্ষা কর্মকর্তা

75

সাতকানিয়াসহ কয়েকটি উপজেলায় ছেলে ধরা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে ফেসবুক এখন সরব। পুলিশ এটিকে গুজব উল্লেখ করেছে এবং এমন গুজব না ছড়াতে নাগরিকদের আহব্বান জানিয়েছে। কিন্তু সাতকানিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ চিরাণ উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে জরুরি বিজ্ঞপ্তি শিরোনামে মুখোশ পরিহিত ছেলে ধরাচক্রের সদস্যের হাত থেকে এক ছাত্রী রক্ষা পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া তিনি শিক্ষার্থীদের ছেলে ধরাচক্রের হাত থেকে রক্ষায় অভিভাবকদের অবহিত ও সাবধানতা অবলম্বন করতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশ দেন।
এদিকে এ নির্দেশ পেয়ে বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মঙ্গলবার ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে সভা করে। এছাড়া শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশের কথা ছড়িয়ে পড়লে জনসাধারণের মাঝে ছেলে ধরার বিষয়টি সঠিক বলে মনে হয়।
তবে মঙ্গলবার সাতকানিয়া থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সাতকানিয়ায় ছেলে ধরা নামে গুজবে জনসাধারণকে কান না দিয়ে সজাগ থাকার অনুরোধ করা হয়। এছাড়া এ সংক্রান্ত কোন তথ্য থাকলে থানার অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করার জন্যও অনুরোধ করা হয়।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ চিরানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ফেসবুকে এমন নির্দেশ তিনি দিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী জানা যায়, গত ৮ জুলাই চরতী ইউনিয়নের তালগাঁও আল-হেলাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীকে সিএনজিতে করে অপহরণ করার চেষ্টা করা হয়। লোকজন দেখে ফেলায় অপহরণকারীরা ওই ছাত্রীকে ফেলে চলে যায়। আর এসব অপহরণকারীকে ছেলে ধরা বলে ধারণা করা হয়।
তিনি জানান, দুর্যোগকালীন বা ভারিবর্ষণের সময় ছেলে ধরা বা অপহরণকারীরা সুযোগ নিতে পারে। তাই এ সময় নিজ নিজ ছেলে-মেয়েদের বিদ্যালয়ে আনা-নেওয়ার বিষয়টিও অভিভাবকদের বলতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
যোগাযোগ করা হয় তালগাঁও আল-হেলাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শেখ তোহফা খানম বলেন, আমি ঘটনা দেখিনি। তবে আমার এক কলিগ বলেছেন, স্থানীয় রফিকুল ইসলামের কন্যা আমার স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিহা আক্তার তাকে স্কুলে আসার সময় একটি সিএনজিতে উঠাতে চেয়েছিল। সে না উঠে দৌড় দিয়ে চলে আসে। পরে আমি আরও লোকজনের কাছে শুনেছি সামিহাকে অপহরণ করতে চেয়েছিল।
এদিকে গতকাল থেকে কাঞ্চনা ইউনিয়নের ফুলতলায় ছেলে অপহরণকারী সন্দেহে একজনকে গণধোলাই দেওয়া হয়। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি ছেলে ধরা বলে প্রচার হলেও গণধোলাইয়ের শিকার যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জানা গেছে।
সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সফিউল কবির বলেন, বেশ কয়েকটি সংবাদ আমার কানে এসেছে। তদন্ত করে দেখা গেছে সবকটি গুজব।