সাঙ্গুর ভাঙনের হুমকিতে অর্ধশত ঘর

31

বান্দরবানে সাঙ্গুনদীর ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার। তারা এখন বসতবাড়ি নিয়ে ভাঙন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। ইতিমধ্যে বন্যা, পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে জেলা শহরের পৌরসভা ভবনের পিছনে, উজানি পাড়া, বনানী স-মিল, ইসলামপুর, ইউছুপ সিকদার পাড়া, লাংগি পাড়াসহ নদী তীরবর্তী স্থানের অনেক ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
গত সপ্তাহে কয়েক দিনের টানা ভারিবর্ষণ ও ঢলে সাঙ্গুর পানি অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পায়। এ কারণে নদী ভাঙন ও বসতবাড়ি নদীর গর্ভে বিলীন হয়। এখন বেশকিছু এলাকার স্থায়ী বাসিন্দারা নদী ভাঙন আতঙ্কে ভুগছেন। প্রতিবছর বর্ষা মওসুমে সাঙ্গুর স্রোতে বাড়িঘর ভাসিয়ে নিলেও পরবর্তীতে আবারও এখানে বসতি গড়ে ওঠে।
স্থানীয়দের মতে, দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী অসহায় জনসাধারণ নদীর পাড়ে বসতি স্থাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই নদীর পাড়ে বসবাস করছে তারা। সরকারিভাবে তাদের পুনর্বাসন করা হলে এখানে আর কেউ বসতি স্থাপন করবে না।
পরিবেশ ও মৃত্তিকা বিজ্ঞানীদের মতে, বান্দরবান সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর অববাহিকায় অবস্থিত। ব্যাপক বৃষ্টিপাতে কোটি কোটি কিউবিক মিটার পানি নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়। সেই সাথে পাহাড়ি মাটিতে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যায়। এতে নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যায়। এজন্য বন্যার সৃষ্টি হয়, নদীর পাড় ভাঙে। এ পরিস্থিতিতে বান্দরবান শহরের চারদিকে বাঁধ দিয়ে শহর রক্ষা কিংবা নদীতে ড্রেজিং করা খুব জরুরি। কেবলমাত্র শহর রক্ষা নয়, শহরতলী ও পাহাড়তলীতে বসবাসকারীদের বিষয়েও নতুন করে ভাবতে হবে। বন্যার মূল কারণ চিহ্নিত করে তা সমাধানে এগিয়ে যেতে হবে।
জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের মতে, ভাঙনরোধে সাঙ্গু পাড়ে বসতি স্থাপনকারীদের জন্য দ্রæত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তাদেরকে অন্যত্র পুনর্বাসনের মাধ্যমে নদীর তীরবর্তী এলাকা মেরামত করা প্রয়োজন।
তাদের মতে, বসতিগুলো তুলে সাঙ্গুনদীর দুই পাড়ে প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ করা হলে বান্দরবানের সৌর্ন্দয্য বৃদ্ধি পাবে। পর্যটকদের কাছে বান্দরবান হবে আরও আকর্ষণীয়। আর বান্দরবানে বসবাসকারী জনগণ পাবেন স্বাস্থ্যসম্মত নির্মল পরিবেশ।
বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন বলেন, পরিবেশ ও নদীর রক্ষা করতে হলে আমাদেরকে নদীর দুই ধারে বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে। পাহাড় ক্ষয়রোধ করতে হবে। যেসব পাহাড় নেড়া হয়েছে, সেদিকে আগে নজর দিতে হবে, পরিবেশ বাঁচাতে হবে। কারণ সাঙ্গু ভরাট হয়ে গেছে পাহাড়ধসের কারণে।
তিনি বলেন, নদীর পাড়ের মানুষকে পুনর্বাসনে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সদর উপজেলায় ৫টি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। কেন্দ্রেগুলোতে পুনর্বাসন করা হবে। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষে বারবার বলা হচ্ছে, ঝুকিপুর্ণ স্থান থেকে তাদের সরে যেতে। কারণ যেকোন মুহুর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।