উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে বিএনপির মনোনয়নে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা তিনজনের প্রার্থিতা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আটকে গেছে। এছাড়া আরও দুইজনের মনোনয়নপত্র স্থগিত করে হাই কোর্ট সোমবার রুল জারি করেছে।
ফলে ঢাকা-২০ আসনে বিএনপির প্রার্থী ধামরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তমিজ উদ্দিন, বগুড়া-৩ আসনের প্রার্থী আদমদিঘী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোহিত তালুকদার এবং বগুড়া-৭ আসনের প্রার্থী শাহজাহানপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরকার বাদল আর ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। ঢাকা-১ আসনের প্রার্থী নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাক এবং বগুড়া-৭ আসনের প্রার্থী গাবতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিল্টন মোর্শেদের ভোটের পথও আটকে গেছে। খবর বিডিনিউজের
তমিজ উদ্দিনের মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশন বৈধ ঘোষণা করলেও হাই কোর্ট তা স্থগিত করেছিল। কিন্তু তার আবেদনে হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত করে দিয়েছিল চেম্বার আদালত। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সাত বিচারকের আপিল বেঞ্চ সোমবার চেম্বার আদালতের স্থগিতাদেশ তুলে নিয়েছে। ফলে হাই কোর্টের আদেশই বহাল থাকছে এবং তমিজ উদ্দিন নির্বাচন করতে পারছেন না।
বগুড়ার মোহিত তালুকদার এবং সরকার বাদলের মনোনয়ন পত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত হাই কোর্ট স্থগিত করায় তাদের ভোটের আশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু হাই কোর্টের ওই আদেশ চেম্বার আদালতে স্থগিত হয়ে যায়। আপিল বিভাগ সোমবার ওই স্থগিতাদেশ চলমান রেখেছে।
আপিল আদালতে তিন প্রার্থীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও প্রবীর নিয়োগী। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সানজিদ সিদ্দিকী।
সানজিদ সাংবাদিকদের বলেন, “আপিল বিভাগের আদেশের ফলে বিএনপি মনোনীত এ তিন প্রার্থী আর নির্বাচন করতে পারছেন না।”
ওই তিনজনের মধ্যে তমিজ উদ্দিন ও মোহিত তালুকদার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন; কিন্তু তা গৃহীত না হওয়ায় প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। আর সরকার বাদল পদত্যাগ না করেই প্রার্থী হয়েছিলেন বলে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
ঢাকা-১ আসনের বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাকের মনোনয়ন পত্র নির্বাচন কমিশনে পেলেও হাই কোর্ট সোমবার তা স্থগিত করে দিয়েছে।
ওই আসনে কুলা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা বিকল্প ধারার জালাল উদ্দিনের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার শামীম আহমেদ মেহেদী ও ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম।
আদালতের আদেশের পর আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান পদের পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার আগেই আশফাক মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। “নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষণা করেছিল। নির্বাচন কমিশনের ওই সিদ্ধান্ত হাই কোর্ট স্থগিত করে দিয়েছে।”
ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম বলেন, কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত হওয়ায় আশফাক আপাতত আর নির্বাচন করতে পারছেন না।