সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৯০ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারি আবাসন সুবিধাবঞ্চিত

74

চট্টগ্রামে চরম আবাসন সংকটে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। বিগত ৪০ বছরেও এ সংকট ঘুচেনি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সরকার কর্মকর্তা-কর্মচারিদের আবাসন সংকট লাঘবে পদক্ষেপ নিয়েছেন। তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রামে ৯০ শতাংশ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের আবাসন সুবিধা নেই।
সরকারি আবাসন পরিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে গেজেটেডসহ কর্মকর্তার সংখ্যা রয়েছে ৩ হাজার ৯৫৪ জন। কর্মচারি রয়েছে ২২ হাজার ১২৪ জন। সবমিলিয়ে ২৬ হাজার ৭৮ টি ফ্ল্যাটের প্রয়োজন আবাসন সুবিধা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বর্তমানে আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন মাত্র ২ হাজার ৩২৬ জন। যা মোট কর্মকর্তা-কর্মচারির ১০ শতাংশের কম।
তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় বেতন স্কেলের তৃতীয় থেকে চতুর্থ স্তরের কর্মকর্তারা ‘এফ’ ক্যাটাগরির ১৫’শ বর্গফুটের বাসার সুবিধা পেয়ে থাকেন। একইভাবে পঞ্চম থেকে সপ্তম স্তরের বেতন কাঠামোর কর্মকর্তারা ‘ই’ ক্যাটাগরির ১২’শ বর্গফুট এবং অষ্টম থেকে একাদশ স্তরের কর্মকর্তারা ‘ডি’ ক্যাটাগরির ১ হাজার বর্গফুটের আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন। একইভাবে দ্বাদশ থেকে চতুর্দশ স্তরের বেতন কাঠামোর সরকারি কর্মচারিরা ‘সি’ ক্যাটাগরির ৮’শ বর্গফুট, পঞ্চদশ থেকে উনবিংশ স্তরের কর্মচারিরা ‘বি’ ক্যাটাগরির ৬’শ বর্গফুট এবং বিংশ ও একবিংশ স্তরের বেতন কাঠামোর কর্মচারিরা ‘এ’ ক্যাটাগরির ৫’শ বর্গফুটের আবাসন সুবিধা ভোগ করছেন।
চট্টগ্রাম সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের তথ্য মতে, চট্টগ্রামে বর্তমানে ২ হাজার ৩২৬ আবাসনের মধ্যে ২ টি ‘এফ’ ক্যাটাগরির, ১৫ টি ‘ই’ ক্যাটাগরির, ‘ডি-১’ ক্যাটাগরির ৯০ টি, ‘ডি-২’ ক্যাটাগরির ১১৭ টি, ‘সি-২’ ক্যাটাগরির ৪৩৪ টি, ‘বি’ ক্যাটাগরির ১ হাজার ৪৫ টি, ‘এ’ ক্যাটাগরির ২৭০ টি এবং বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৩৫৩ টি ফ্ল্যাট রয়েছে।
আবাসন পরিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, অপ্রতুল বাসস্থান সুবিধার কারণে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের অনেক বেশি ভাড়া দিয়ে বেসরকারি বাসায় থাকতে হয়। এ কারণে বেতনের সাথে প্রাপ্ত বাড়ি ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করতে হয়। তাছাড়া বর্তমানে যেসব আবাসন রয়েছে সবগুলোই ৩০-৪০ বছরের পুরোনো। ৫০-৬০ বছরের পুরোনো পরিত্যক্ত বাড়িতেও এখনো বসবাস করছেন অনেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি।
চট্টগ্রাম সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের উপ-পরিচালক খিন ওয়ান নু পূর্বদেশকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের আবাসন সংকট প্রকট। চট্টগ্রামের ২৬ হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারি থাকলেও আমরা এক দশমাংশও আবাসনও দিতে পারি না। আবার বর্তমানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য যেসব আবাসন রয়েছে সবগুলোই অনেক পুরোনো। ৩০-৪০ বছরের মধ্যে চট্টগ্রামে নতুন কোনো আবাসন নির্মাণ হয়নি। যে কারণে বছরের পর বছর সংকট রয়ে গেছে’। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সরকার কর্মকর্তা-কর্মচারিদের আবাসন সংকট ঘুচানোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটি ২০ তলা ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। তাছাড়া নগরীর বিভিন্ন স্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা সরকারি বাড়িগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য আবাসন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনেকগুলো বাড়িতে ভবন নির্মাণ কাজও শুরু হয়েছে। আশা করি সামনের দিনগুলোতে সরকারি আবাসন সংকট অনেক কমে আসবে’।