সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু শিগগিরই

73

বন্দর নগরী চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি স্টাডি) শিগগিরই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন- চট্টগ্রামের মেট্রোরেল বা এমআরটি লাইনের ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু করার জন্য। তার নির্দেশনা অনুযায়ী আমি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মেট্রোরেলের সাথে যারা জড়িত, তাদের বলেছি অবিলম্বে ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু করতে হবে; বন্দর নগরী চট্টগ্রামের জন্য।”
চট্টগ্রামে প্রস্তাবিত মেট্রোরেল প্রকল্পে তিনটি এমআরটি লাইন করার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এমআরটি লাইন-১ এর দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে ২৬ কিলোমিটার (২০টি স্টেশন), সিটি গেট থেকে নিমতলা হয়ে শাহ আমানত সেতুর গোল চত্বর পর্যন্ত লাইন-২ এর দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার (১২টি স্টেশন) এবং অক্সিজেন থেকে ফিরিঙ্গিবাজার ও পাঁচলাইশ থেকে একেখান পর্যন্ত লাইন-৩ এর দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে ১৪ কিলোমিটার (স্টেশন ১৫টি)।
তিনটি লাইনের মোট দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে ৫৪ কিলোমিটার, স্টেশন থাকবে মোট ৪৭টি। প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রস্তাবে। তবে কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রস্তাবিত লাইন স্থাপনে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার ও নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে ‘প্রতিবন্ধক’ মনে করছে প্রাক-যোগ্যতা সমীক্ষাকারী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। খবর বিডিনিউজের
মঙ্গলবারের একনেক সভায় সড়কের কয়েকটি প্রকল্প পাস হয়েছে জানিয়ে সড়কমন্ত্রী বলেন, “আজকে ঢাকা সিটির সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে যানজট। এটা বড় দুর্ভাবনারও বিষয়। এমআরটি লাইন-৬ (মেট্রোরেল) এর কাজ শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন এমআরটি লাই-১ ও ৫ এর ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ হয়েছে। এই দুটি প্রকল্প ৯১ হাজার কোটি টাকার। যার বেশিরভাগ হচ্ছে জাপানি ফান্ড, জাইকার ফান্ডের প্রজেক্ট।”
এমআরটি লাইন-৫ এ সাড়ে ১৬ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “এমআরটি লাইন-১ এর সাড়ে ১৩ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড ফ্যাসিলিটিজ থাকবে। খুব শিগগিরই আমরা ফিজিক্যাল ওয়ার্ক শুরু করতে যাচ্ছি। ফিজিবিলিটি শেষ হয়ে গেছে। টাকা বরাদ্দ ও অ্যাপ্রুভড হয়ে গেছে। কাজেই ফিজিক্যাল কাজ শুরু করতে আর বেশি দেরি হবে না। আমরা এ ব্যাপারে প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
ঢাকা ও আশপাশের এলাকার যানজট নিরসন ও পরিবেশ উন্নয়নে আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা হিসেবে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) বা মেট্রোরেলের পরিকল্পনা, সার্ভে, ডিজাইন, অর্থায়ন, নির্মাণ, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২০১৩ সালের ৩ জুন ডিএমটিসিএল গঠন করা হয়।
এর ধারাবাহিকতায় ২০৩০ সালের মধ্যে ছয়টি মেট্রোরেলের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পনা নেয় সরকার। এর মধ্যে এমআরটি-৬ এ উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময় ধরা হলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পরে তা এগিয়ে আনা হয় বলে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন। এই প্রকল্পের প্রথম ধাপ উত্তরা থেকে আগারগাঁওয়ে এ বছরের শেষ নাগাদ ট্রেন চালুর আশা প্রকাশ করছেন সরকারের কর্মকর্তারা।
দ্বিতীয় ধাপ আগারগাঁও থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে গত অক্টোবরে বলেছিলেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী জাপান সরকারের দাতা সংস্থা জাইকার একটি প্রতিনিধি দল গত ফেব্রুয়ারিতে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে সাক্ষাতে এমআরটি-৬ প্রকল্পের কাজ ২০২২ সালে শেষ হবে বলে জানিয়েছিলেন।