বিগত সোমবার স্পেনের ফেরিয়া দা মাদ্রিদে (আইএফইএমএ) ‘অ্যাকশন ফর সারভাইভাল: ভালনারেবল নেশনস কাপ-২৫ লিডার্স সামিটের উদ্বোধন হয়। দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রতিবেদন হতে জানতে পারি উক্ত প্রোগ্রামের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখেন। তিনি উক্ত সামিটে বলেন ‘আমরা যদি আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হই, তাহলে তারা ক্ষমা করবে না। প্রতি মুহূর্তে আমাদের নিষ্ক্রিয়তা পৃথিবীর প্রতিটি জীবিত মানুষকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এখনই সময় কাজ করার’। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর এ বক্তব্য বিশ্ব মানবের ভবিষ্যৎ পরিবেশ নিশ্চিত করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সমগ্র বিশ্বে যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকিতে রয়েছে তৎমধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। বাংলাদেশের মৌসুমি বায়ু, প্রাকৃতিক ভারসাম্য এবং জলবায়ু স্বাভাবিক আচরণ করছেনা। এমন অবস্থা আরো বহু দেশের রয়েছে। উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মূলে রয়েছে অস্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশ। বিশ্বায়নের টাটোঘোড়া এগিয়ে চলেছে লাগামহীন। যার ফলে বাড়ছে কলকারখানা, বাড়ছে প্রকৃতির ধ্বংসলীলা। গাছকাটা, পাহাড়কাটা, জলাশয় ভরাট, জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মতো কাজ সমগ্র বিশ্বে দিন দিন বেড়েই চলেছে। তার সাথে রয়েছে বিভিন্ন দেশের আগ্নেয়াস্ত্র ও পারমাণবিক প্রতিযোগিতা। যার ফলে দূষিত হচ্ছে বায়ুমÐল। বাড়ছে উষ্ণতা, গলছে বরফ। বাড়ছে সমুদ্রের নাব্যতা আর ঝড়, সুনামি, ভূমিকম্পের ঝুঁকির মধ্যে পার হচ্ছে বিশ্ব মানবের জীবনপ্রবাহ। গ্রিনহাউস গ্যাস হ্রাসে যথাযথ অগ্রগতিনেই বিশ্বসংস্থা সমূহের। কালো ধোঁয়া নির্গমন কার্যক্রম বাড়ছে প্রতিনিয়ত। যা রোধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে পৃথিবী। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাসের কারণে স্থানচ্যুত হচ্ছে বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের বহুমানুষ। জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্ব মানবের জন্য এক কঠিন বাস্তবতা।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা জরুরি। এ বিষয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। যা সমগ্র বিশ্বব্যাপী অনুসরণ করলে বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন ও তৎজনিত ঝুঁকি কমে আসবে বিশ্বে। জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগজনিত দুর্ভোগ বিষয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সবুজায়ন কর্মসূচির কারণে নিকট অতীতে দেশ অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রেহাই পেতে দেখা গেছে। বিশ্বের যে কয়টি দেশে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার দেশিয় এবং বিশ্বসংস্থার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে তৎমধ্যে আমাদের দেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করছে। যুক্তরাজ্যের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ও সহায়তার তালিকায় বাংলাদেশ স্থান পেয়েছে। সবকিছুর অন্তরালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতাই আমাদের পাথেয় হয়ে রয়েছে। আমরা মনে করি সমগ্র বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকিতে থাকা দেশসমূহের পাশে জাতিসংঘসহ বিশ্বের ধনী দেশগুলোর সহায়তা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
আগামী প্রজন্মকে রক্ষা ও ভবিষ্যতের বাসযোগ্য পৃথিবী বিনির্মাণে বিশ্বের সবদেশ ও সংস্থাকে একযোগে কাজ করতে হবে।
দরিদ্র দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা করতে জাতিসংঘসহ বিশ্বের ধনী দেশসমূহের অগ্রণী ভূমিকা আশা করে সমগ্র বিশ্বের মানুষ।