সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষ সিলগালা

17

আবরার ফাহাদকে হত্যার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুয়েটে রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধের পর এবার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই নেতার ছাত্রাবাসের কক্ষ বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গতকাল শনিবার বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা (ডিএসডবিøউ) মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে আহসান উল্লাহ হলে ছাত্রলীগের সভাপতি ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র জামি উস সানির ৩২১ নম্বর কক্ষ এবং শেরে বাংলা হলে সাধারণ সম্পাদক ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের মেহেদী হাসান রাসেলের ৩০১২ নম্বর কক্ষ সিলগালা করে বন্ধ করা হয়।
পরে অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, “ছাত্রদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা ঘোষিত পদক্ষেপ অনুযায়ী হলে অবৈধ ছাত্রদের রুম সিলগালা করা শুরু করেছি। সিম্বলিক পদক্ষেপ হিসেবে প্রথম দিনে আমরা কয়েকটি হলের ৩-৪টি রুম সিলগালা করি। হলে ছাত্রত্বের বৈধতা না থাকায় তাদের রুমগুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়। এই অভিযান চলমান থাকবে এবং বাকীগুলো হল প্রভোস্টের নেতৃত্বে সিলগালা করে দেওয়া হবে।” খবর বিডিনিউজের
সিলগালা করার সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি জামি উস সানি কক্ষেই ছিলেন বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “সকালে রুম সিলগালা করার সময় আমি রুমেই ছিলাম। স্যাররা এসে সিলগালা করে দেন। আর আহসান উল্লাহ হলের ১২১ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগের অফিস ছিল। সেটাও সিলগালা করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি এখনও বৈধ ছাত্র, কিন্তু অনিয়মিত। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সকল অনিয়মিত অছাত্রদের হল থেকে উচ্ছেদ চলছে। আমরা এই বিষয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছি।”
এর আগে বুয়েটের হলগুলো থেকে সিট দখলদারিত্ব উচ্ছেদ ও সাংগঠনিক ছাত্র সংগঠনগুলোর অফিস সিলগালা করার নির্দেশনা জারি করে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. সাইদুর রহমান এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেন। এতে বলা হয়, অবৈধভাবে যারা হলের সিট দখল করে আছে, তাদেরকে সিট খালি করা, সাংগঠনিক ছাত্র সংগঠনগুলোর অফিস কক্ষ বন্ধ করে তা সিলগালা করার জন্য ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ব্যবস্থা নেবেন।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, কোনো শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে র‌্যাগিং বা ছাত্র নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে ডিসিপ্লিনারি কমিটির মাধ্যমে তা দ্রুত বিচার করে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
আবরারের মৃত্যুর পর থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শুক্রবার উপাচার্য সাইফুল ইসলাম বৈঠক করে তাদের ১০ দাবির অিনেকগুলোই মেনে নেন। কিন্তু ১৪ অক্টোবরের ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি ঝুলে ছিল। এরপর আন্দোলনকারীরা তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য পাঁচটি দাবি দেয়, যার মধ্যে বুয়েটে সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করে সব হল থেকে অবৈধ ছাত্রদের উৎখাত, অবৈধভাবে হলের সিট দখলকারীদের উৎখাত এবং ছাত্র সংগঠনগুলোর অফিস সিলগালা করার দাবিও ছিল। ভর্তি পরীক্ষার জন্য আগামী ১৩ ও ১৪ অক্টোবর কোনো কর্মসূচি রাখা হবে না বলে জানিয়েছেন আন্দেলনকারী শিক্ষার্থীরা।