সভাপতি ক্যশৈহ্লা সম্পাদক বেবী

28

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ধারা চলছে। অন্যদিকে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি হিসেবে আরেকটি দল কাজ করছে। যারা ক্ষমতায় থাকতে দেশ ও জনগণের জন্য কোন কাজ করেনি। তারা বারবার আঘাত করেছে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে।
তিনি বলেন, পাহাড়ে শেখ হাসিনা সরকারের নেতৃত্বে শান্তিচুক্তি করা হয়। তাই কেউ অবৈধ অস্ত্র হাতে নিয়ে মানুষের জীবনকে দুবির্ষহ করার চেষ্টা করবেন না, এতে কারো কল্যাণ আসবে না। পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা অশান্ত পাহাড়ে শান্তিচুক্তির মধ্যদিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বলেন, ৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা জাতি-গোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে পাহাড়কে অশান্ত করেছিল। বান্দরবানের রাজার মাঠে অনুষ্ঠিত বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল সোমবার জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
সকালে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরে বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মাহাবুব উল আলম হানিফ এমপি।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি দেশের সম্পদ লুটেপুটে খেয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, যারা গণহত্যা চালিয়েছিল, মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করেছিল, ঘর জ্বালিয়েছিল, মা- বোনের সম্ভ্রমহানী করেছিল, সেসব বিতর্কিত ব্যক্তিরা দেশপ্রেমিক হতে পারে না। যে দলের শীর্ষ নেত্রী ও নেতা দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের কারণে আদালত থেকে দন্ডপ্রাপ্ত, তাদের প্রতি কারো আস্থা থাকতে পারে না।
কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শিক রাজনীতির ধারা ফিরিয়ে আনতে পারলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে সকল ধর্মের সকল মানুষের বসবাসের জন্য বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমরা সবাই প্রধানমন্ত্রীর সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব।
তিনি বলেন, পানিকে যেমন বিভাজন করা যায় না, তেমনি বান্দরবানের মাটি ও মানুষের কাছ থেকে বিভাজন করা যায় না বীর বাহাদুরকে।
কেন্দ্রীয় উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, বীর এবং বাহাদুরের মাঝে কর্মের মাধ্যমে সমন্বয় করেছের বীর বাহাদুর। তিনি তার রাজনৈতিক উচ্চতা সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। পার্বত্য অঞ্চল এক সময় অবহেলিত ছিল। প্রধানমন্ত্রী এ পার্বত্য এলাকায় অগ্রধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। দেশের মানুষের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করছে আওয়ামী লীগ।
সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাবেক সংগঠনিক সম্পাদক ও পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন খাগড়াছড়ি আসনের সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, মহিলা এমপি বাসন্তী চাকমা, বান্দরবান পৌর মেয়র ইসলাম বেবী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাহাদুর, কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম, সাবেক যুব ও ক্রিড়া বিষয়ক সম্পাদক মংসুইঝপ্রু চৌধুরী অপু, উপ-প্রচার সম্পাদক শফিকুর রহমান ফারুক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, কক্সবাজার পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় কৃষকলীগ নেতা রেজাউল করিম, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুব হক মুকুল, সদস্য সোনা আলী, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার দে, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক শফিকুর রহমান প্রমুখ।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লা। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লক্ষী পদ দাশ।
ক্যশৈহ্লা সভাপতি, ইসলাম বেবী সম্পাদক : জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মার্মা ও সাধারণ সম্পাদক পদে পৌর মেয়র ইসলাম বেবী পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে এই দুই নেতার নাম ঘোষণা করা হয়।
দ্বিতীয় অধিবেশনে ১৫৬ জন কাউন্সিলরের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। কাউন্সিল অধিবেশন সমন্বয় করেন পার্বত্যমন্ত্রী ও বান্দরবান আসনের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর।