সব ধর্মমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ইসকন

75

অন্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত দেওয়া বা তাদের কর্মকান্ডের নিন্দা করা ইসকন ভাবাদর্শের পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক দারুব্রহ্ম জগন্নাথ দাস।
গতকাল বিকালে মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
ইসকন ফুড ফর লাইফ কর্তৃক স্কুলে খাবার বিতরণ নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রচারের প্রেক্ষিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্যে দারুব্রহ্ম জগন্নাথ দাস বলেন, ইসকন সব ধর্মমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুলে ইসকল ফুড ফর লাইফের খাবার বিতরণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক প্রচার চালানো হচ্ছে। রথযাত্রা উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরীর দশটি স্কুলে ইসকনের পক্ষ থেকে হিন্দু ছাত্রছাত্রীদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। রথযাত্রার শুভেচ্ছা হিসেবে এ কার্যক্রম চলে আসলেও সেবামুলক এ কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মানসে একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রচার চালাচ্ছে। একটি স্কুলে খাবার গ্রহণের ভিডিও ধারণ করে এবং অন্য একটি স্কুলের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। অথচ শুধুমাত্র হিন্দু ছাত্রছাত্রীদের মাঝে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বিতরণ করা হয়েছে এবং হিন্দু অধ্যুষিত এরাকার একটি স্কুলে হিন্দু ছাত্রছাত্রীরাই ‘হরে কৃষ্ণ’ মন্ত্র বলেছে।
তিনি বলেন, আবহমান বাংলার চিরায়ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য আমরা ধারণ করি এবং দলমত নির্বিশেষে সকলের সহাবস্থানের মাধ্যমে সুন্দর বাংলাদেশ গঠনে আমরা বদ্ধপরিকর। শুধুমাত্র মনুষ্যজাতি নয়, ইসকন অনুসারীরা সৃষ্টির কোন জীবকে মনক্ষুন্ন হয় এমন কোন কার্যকলাপের সাথে যুক্ত নয়। এরপরও আমাদের আচরণে যদি কেউ দুঃখ পেয়ে থাকেন বা কারো মনে আঘাত লেগে থাকে, সেজন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতে আমরা আরো সতর্কতার সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করবো।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস বলেন, যে স্কুলে খাবার পরিবেশনের কথা বলা হচ্ছে, তা ভুল। প্রকৃতপক্ষে স্কুলটি হলো পাথরঘাটা জেডি স্কুল। এ স্কুলে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই হিন্দু। বাকলিয়া স্কুলে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। বাকলিয়া স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় কাউন্সিলর বিষয়টি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুন্দর পরিবেশ বিনষ্ট ও অশান্তি সৃষ্টি করতে একটি পক্ষ চেষ্টা করছে। যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তাদের পরিচয় নাই। তারা ফেক আইডি (নকল আইডি) থেকেই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। যারা এগুলো ছড়ায় তারা চায় না সব ধর্মের মানুষ একসাথে থাকুক। রথযাত্রা ও উল্টো রথযাত্রায় দুটি অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে। গত বছর রথযাত্রার পরেও একটি চক্র নন্দনকানন ও প্রবর্তক ইসকন মন্দিরে নানা হুমকি দিয়ে পত্র দিয়েছিল বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন লীলারাজ গৌরদাস ব্রহ্মচারী, রূপেশ^র কৃষ্ণ দাস, সোমনাথ দাস, সুচারু কৃষ্ণ দাস, উজ্জ্বল নিলম্বর দাস, প্রানকৃষ্ণ দাস প্রমুখ।