সবজির দাম কিছুটা কমে কেজি ৫০ টাকার মধ্যে

56

কোরবানি ঈদের পর থেকে কমেছে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। তবুও ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সব কাঁচাবাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ হয়েছিলো। টানা বৃষ্টি ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় সবজির দাম বেড়ে যায় বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। তবে সবচেয়ে বেশি ছিলো কাঁচা মরিচের দাম। মাংসের দাম আগের মত থাকলেও মাছের দাম অনেকাংশে কমেছে।
গতকাল শুক্রবার কাজীর দেউড়ী, চকবাজার, ষোলশহর কর্ণফুলী মার্কেটসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
দুই সপ্তাহ পূর্বে এসব বাজারে বেশিরভাগ সবজি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৫০ টাকার মধ্যে চলে এসেছে। দাম কমার কারণ হিসেবে দোকানিরা বলছেন, ঈদের ছুটি এখনো শেষ হয়নি। সে তুলনায় নগরীতে মানুষও এসেছে কম। সবজি আসলেও তা সময়মত বিক্রি না হওয়ায় একটু কম দামে ছেড়ে দিচ্ছেন বিক্রেতারা।
কর্ণফুলি কমপ্লেক্সে সবজি ক্রেতা খোরশেদ আলম বলেন, এখনো সবার ঘরে ঘরে মাংস রয়েছে। সে কারণে মাছসহ অন্যান্য সবজির দাম একটু কম বলে মনে হচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঝিঙা, চিচিংগা, কাকরোল, ঢেঁড়স, লাউ, করলাসহ প্রায় সব সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা করে কমেছে। গত সপ্তাহে শসা, কাকরোল, বাঁধাকপি, ঢেঁড়শ ও লাউ ছিলো ৮০ টাকা কেজি আর এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।
কচুর লতি, ধুন্দল, বরবটি, ঝিঙা, চিচিঙ্গা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিলো ৮০ টাকার বেশি। তবে দাম বেড়ে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায় যা গত সপ্তাহে ছিলো ১২০ টাকা।
এদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে কাঁচা মরিচের দাম। গত সপ্তাহে ছিলো ১২০ টাকা যা বর্তমানেও নির্ধারিত রয়েছে। তবে ১০ টাকা বেড়ে শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। পেপে আগে ছিলো ৪০ টাকা আর গতকাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। সিম আর ফুলকপি গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিলো ২০০ টাকায়, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি। আলুর দাম ১০ টাকা কমে ৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। তবে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি ১২০ টাকায় যা পূর্বে ছিল ৯৫ টাকা।
মাছের দাম তুলনামূলক কম। প্রতি কেজি লইট্টা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিলো ১৮০ টাকায় আর এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।পোয়া ৪০০ টাকা, চিংড়ি আকারভেদে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা, ইলিশ আকারভেদে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা, রূপচাঁন্দা ১০০০ টাকা, দেশি রুই ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে প্রত্যেক মাছ কেজিতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি ছিলো বলে জানান ব্যবসায়ী মো. মোতালেব ও মো. হোসেন।
মাংসের বাজারে দামের তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি, গরুর রানের মাংস (হাড়ছাড়া) বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা। আর হাড়সহ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়।
কাজীর দেউড়ী বাজারে আসা সোলায়মান আলম শেঠ বলেন, সবজি এবং মাছের দাম কিছুটা কমেছে। তবে এত বেশি কমেনি।
রেয়াজউদ্দিন বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ী মো. মামুন বলেন, গ্রাম থেকে বরাবরের মত সবজি আসছে কিন্তু গ্রাম থেকে সব মানুষ এখনো শহরমুখী হয়নি। তাই দাম একটু কম মনে হচ্ছে।
দাম হাতের নাগালে হচ্ছে না কেন এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বর্ষা আর জলাবদ্ধতার কারণে পরিবহন ভাড়া একটু বেশি দিতে হচ্ছে। সেটিও আমরা হিসেবে আনছি। আবার ক্ষেতের চাষীরাও বৃষ্টির কারণে পর্যাপ্ত সবজি সরবরাহ করতে না পারায় একটু দাম বেশি। আগের মত সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমবে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজার পরিদর্শক বিল্লাল হোসেন পূর্বদেশকে বলেন, বাজারে খুচরা পর্যায়ে সবজির চাহিদা বাড়লে পাইকাররাও দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যাপ্ত সবজি আনবেন। এখন চাহিদা কম থাকায় এখনো পুরোদমে সরবরাহ হয়নি বলে মনে করছি।