সন্দ্বীপের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো যেন লাল সবুজের পতাকা

161

লাল এবং সবুজ রঙের মিশেলে বিশাল জাতীয় পতাকা আঁকা সন্দ্বীপের অনেকগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেয়াল। প্রথম দেখায় মনে হবে বিদ্যালয়টি যেন এক বিশাল রঙিন ক্যানভাস। সন্দ্বীপের মুছাপুর ৪ নং ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় নতুন জেগে উঠা চরে সবুজের বিশাল সমাহার অতিক্রম করে বাঁধ থেকে নামতেই চোখে পড়ে লাল সবুজের মিশেলে বিশাল জাতীয় পতাকার আদলে আঁকা একটি নতুন ভবন। নাম ফলকের দিকে তাকাতে দেখা যায় মুছাপুর গুরুদাস প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রথম দেখায় মনে হবে- বিদ্যালয়টি যেন একটি বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।
সন্দ্বীপের প্রায় অঞ্চলে এ রকম ভবন এখন প্রতিনিয়ত চোখে পড়ে। সন্দ্বীপ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দীনের ফেইসবুক ওয়ালে ‘বিদ্যালয় আমার তীর্থ ক্ষেত্র’ এমন শিরোনামে কিছু সময় ধরে কয়েকটি বিদ্যালয়ের ছবি পোস্ট হতে দেখা যায়। খবর নিয়ে জানা যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ নির্দেশে জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীতের প্রতি খুদে শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা-ভালোবাসা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গুরুদাস প্রাঃ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, এর জন্য সরকারি কোন বরাদ্ধ নেই। ভবনটিকে লাল- সবুজের রঙে জাতীয় পতাকার আদলে সাজাতে খরচ পড়েছে চল্লিশ হাজার টাকা। খরচ হলেও যাতায়াতের সময় বিদ্যালয়টি সবার দৃষ্টি কেড়ে নেয়। চলার পথে অনেকেই থমকে যান। সহজে চোখ ফেরাতে পারেন না। অনেকে আবার আগ্রহ নিয়ে ভবনের সামনে যান, ছবি তোলেন।
সন্দ্বীপের প্রায় ১৫৩ টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪০-৪৫ টি বিদ্যালয় এমন ভাবে সাজানো হলেও কোন কোন বিদ্যালয়ের জাতীয় পতাকার সবুজ রঙ সেই অর্থে পরিস্ফুট হয়ে উঠেনি। অবশ্য বিদ্যালয়ে দেয়ালের এই জাতীয় পতাকার রঙের পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষের ভেতরের দেয়ালে বর্ণমালা, স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার, ফুল, ফল, পাখি, মীনা-রাজুর ছবিসহ বিভিন্ন শিক্ষামূলক চিত্রমালা আঁকা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা খুব খুশি।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হুমায়ুন কবির সেলিম বলেন সাধারণত প্রতি অর্থ বছরের শুরুতে বিদ্যালয় মেরামতসহ আনুষঙ্গিক কাজ বাবদ অর্থ বরাদ্দ দেয় সরকার। এ বছর সে টাকার একাংশ দিয়ে প্রায় ১৫০ টি বিদ্যালয় ভবন বিজয় দিবসের পূর্বে নান্দনিকভাবে রাঙাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন বলেন, জাতীয় পতাকার লাল-সবুজ রং বাংলাদেশের প্রতীক। এই রং দেখলেই সবার মনে প্রশান্তি আসে। দেশের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা বাড়ে। শিশুদের মধ্যে দেশপ্রেম জন্মাতে সহায়ক হবে লাল-সবুজ রং। এই ভাবনা থেকেই বিদ্যালয়গুলো জাতীয় পতাকার রঙে রাঙানো হচ্ছে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পূর্বে সবকটি স্কুল এমন রঙে সাজানোর নির্দেশনা থাকলেও মাত্র ৪০/৪৫ টি ছাড়া বাকিগুলো কেন হচ্ছেনা বা বিজয় দিবসের পূর্বে আদৌ সম্ভব কিনা এমন প্রশ্নে নাম গোপন রাখার স্বার্থে এক শিক্ষক জানান যেসব প্রধান শিক্ষকের ৫২ ও ৭১ এর চেতনার বিরুদ্ধে তারা ফান্ড ঘাটতির প্রশ্ন তুলে স্কুলকে সাজানো থেকে বিরত রয়েছেন। তাই বিজয় দিবসের পূর্বে ১০০% কোন ভাবে সম্ভব নয়।