সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ দমনে সম্মত মোদি-জিনপিং

30

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরালো করাসহ নানা ইস্যুতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা আলাপ করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার ভারতের মামাল্লাপুরাম শহরে নৈশ ভোজের সময় এই আলোচনায় অংশ নেন তারা। দুই নেতা নিজ নিজ দেশে ধর্মীয়, জাতিগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র অক্ষুন্ন রেখে সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ দমনে একমত হন বলে জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।দুই দিনের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে অংশ নিতে শুক্রবার তামিলনাড়ুর মামাল্লাপুরাম শহরে পৌঁছান চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনিপিং। চেন্নাই বিমানবন্দরে অবতরণের পরে তাকে স্বাগত জানান তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমেও চীনের প্রেসিডেন্টকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। পরে চীনের প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
রাতে শি জিনপিং-এর সম্মানে নৈশ ভোজ আয়োজন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এসময় মোদি-জিনপিং-এর আড়াই ঘণ্টা আলোচনা করেন। পরে আলোচনার বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের জানান ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে। তিনি জানান, নির্ধারিত সূচির বাইরেও বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করেছেন দুই নেতা। বিশেষ করে বাণিজ্য ঘাটতি ও ভারসাম্যহীন বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
গোখলে জানান, অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের চমৎকার আয়োজনের জন্য তামিল নাড়ু সরকারের প্রশংসা করেন দুই নেতা। চেন্নাই বিমানবন্দরে পাওয়া অভ্যর্থনায় আপ্লুত হওয়ার কথা মোদিকে জানিয়েছেন জিনপিং। এছাড়া দুই নেতার আলোচনায় পল্লভা ও চোলা সা¤্রাজ্যের আমলে তামিলনাড়ু ও চীনের ফুজিয়ান প্রদেশের উপকূলীয় শহর কুয়ানঝোও এর মধ্যকার ঐতিহাসিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিষয়টিও উঠে আসে। চীনের ওই শহরে স¤প্রতি খুঁজে পাওয়া ১২শ শতাব্দীর এক মন্দিরে তামিল ব্যবসায়ীদের নির্মানের ছাপ পাওয়া গেছে। এই এলাকায় আরও অনুসন্ধান চালাতে একমত হন জিনিপং-মোদি।
এদিকে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা কাটেনি। পাকিস্তানকে সদ্যই এ ইস্যুতে পাশে থাকার প্রতিশ্রæতি দিয়েছে চীন। আর ভারত চাইছে কাশ্মীর প্রসঙ্গ এড়িয়ে চীনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতি। এমনই আবহে ভারতে পা রাখলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। আনন্দাবাজার পত্রিকা জানায়, শুক্রবার দুপুরে চেন্নাই বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন শি। তাকে স্বাগত জানান তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমেও শি কে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে শি’র। সে লক্ষ্যে চেন্নাইয়ে আগেই উপস্থিত হয়েছেন মোদী। খোলামেলা পরিবেশে আলোচনাই শি এর এবারের সফরের লক্ষ্য। তিনি বিমানবন্দরে পা রাখার কিছুক্ষণের মধ্যেই টুইটারে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন মোদী। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাকে সংঘাতমুক্ত রাখতে আরো আস্থা তৈরি করা, সন্ত্রাস এবং পরিবেশ দূষণ ঠেকাতে বাড়তি সহযোগিতা, সর্বোপরি দ্বিপাক্ষীয় বাণিজ্যে ভারতের ঘাটতি কমানোর মতো বিষয়গুলোকেই অগ্রাধিকার দিতে চান মোদী।
আলোচনা যাতে কাশ্মীর-কেন্দ্রীক না হয় সে চেষ্টাই থাকবে বৈঠকে। তবে কাশ্মীর নিয়ে দিল্লি কথা বলতে না চাইলেও নিয়ন্ত্রণরেখায় ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের প্রভাব নিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট কথা বলবেন বলে জানানো হয়েছে খবরে। শনিবার চেন্নাই সফর শেষ করে নেপালে রওনা হবেন শি জিনপিং।