সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনে অগ্নিকান্ড

41

জনপ্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়ে ছয় নম্বর ভবনের সাত ও আটতলার মাঝামাঝি একটি সিঁড়ি কক্ষের বৈদ্যুতিক বোর্ডে অগ্নিকান্ড ঘটেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সচিবালয় ইউনিটের কর্মীরা অল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। আগুনে কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলেও ২১ তলা এই ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, ভয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে পড়েন অনেকেই। সিগারেট থেকে এই আগুন লাগতে পারে বলে ফায়ার সার্ভিস ও মন্ত্রণালয়ের কর্মীরা ধারণা করেছেন। গতকাল রবিবার এই ঘটনা ঘটে।
সচিবালয়ে ৬ নম্বর ভবনের দুই পাশ ছাড়াও মধ্যবর্তী স্থানেও সিঁড়ি রয়েছে।
ছয়টি লিফট রয়েছে ওই মধ্যবর্তী সিঁড়ির পাশে। এই ভবনের সপ্তম তলায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অষ্টম তলায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দপ্তর। ভবনের পূর্বপাশের সিড়ি ঘেঁষে সপ্তম ও অষ্টম তলার মাঝামাঝি একটি ছোট কক্ষে বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক বোর্ড বসানো আছে, কাঠের ওই বোর্ডেই আগুন লেগেছিল। খবর বিডিনিউজের
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ঢাকা জেলার সহকারী পরিচালক মো. ছালেহউদ্দিন বলেন, ‘বৈদ্যুতিক বোর্ডরুমে আগুন লেগেছিল, সেখানো পুরনো কাগজপত্রসহ বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিল, আমরা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলি। সময়মতো আগুন নেভাতে না পারলে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারতো’।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, রবিবার বিকাল সাড়ে ৩ টার কিছুক্ষণ আগে ওই বোর্ডরুম থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখে তারা ফায়ার এস্টিংগুইসার দিয়ে নেভানোর চেষ্টা করেন। এরপরেও ধোঁয়া বের হতে থাকলে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন তারা। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট দ্রæত এসে ওই আগুন নিভিয়ে ফেলে।
আগুন নেভানোর কাজে থাকা ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মী বলেন, ‘আমাদের ধারণা, কেউ সিগারেট খেয়ে ওই কক্ষের দিকে ছুড়ে মেরেছিল, সিগারেট থেকেই আগুন ধরেছে’।
ওই কক্ষটি তালা দিয়ে রাখার কথা থাকলেও কিছু দিন আগে এই ভবনে অগ্নিকান্ডের মহড়ার পর ওই কক্ষগুলো খুলে রাখতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। গতকাল রবিবার ওই কক্ষটি খোলা ছিল জানিয়ে গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘কেউ হয়তো সিগারেটটি না নিভিয়ে ভুল করে ওই কক্ষের দিকে ছুড়ে মেরেছিলেন’।
সাত ও আট তলার মাঝমাঝি ওই সিঁড়ি কক্ষের পাশে সিগারেটের বেশ কিছু পোড়া অংশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এছাড়া বেশ কয়েকটি কার্টনসহ অব্যবহৃত জিনিসপত্রও স্তূপ করে রাখা ছিল ওই কক্ষের সামনে। ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা বলেন, কিছুদিন আগে এই ভবনে অগ্নিকান্ডের মহড়ার পর সব সিঁড়ি থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরানোসহ বেশ কয়েকেটি নির্দেশনা লিখিতভাবে দেওয়া হয়েছিল, একটি নির্দেশনাও এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ১৯ তলায় কালো ধোঁয়া দেখেই তারা দ্রæত নিচে নেমে যান। আগুন লাগার পর থেকে লিফট বন্ধ থাকায় সিঁড়ি বেড়ে নিচে নামের অনেকেই।
আগুন লেগেছে এমন খবর শুনে ৬ নম্বর ভবনের বহুসংখ্যক মানুষকে সিড়ি দিয়ে দ্রæত নিচে নেমে আসতে দেখা যায়। কেউ কেউ ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে একেবারে অফিস ছাড়েন।