সকাল থেকেই ভোটারদের কেন্দ্রে আসার অনুরোধ

46

নেতাকর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে প্রার্থীদের উপর পর্যন্ত হামলার অভিযোগ করা হয়েছে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে। তাছাড়া পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে হয়রানি ও মিথ্যে মামলারও অভিযোগ আনা হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নেই বলে অভিযোগ করেছে জোটের পক্ষ থেকে। তবে এর মধ্যেও ভোটের মাঠে থাকবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন নেতারা। আগামীকাল রবিবার সবাইকে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ‘কেন্দ্র পাহারা’ দেওয়ার আহবানও জানিয়েছেন ধানের শীষের প্রার্থীরা।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-১০ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান পূর্বদেশকে বলেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই, সেটা আমরা বরাবরেই বলে আসছি। কিন্তু এই নির্বাচন আমাদের আন্দোলনের একটি অংশও। তাই আমরা সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যেও নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকবো। ইনশাআল্লাহ খুন, গুম, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের অবসান হবে এবং গণতন্ত্রের নতুন সূর্য উদিত হবে।
ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সবার প্রতি অনুরোধ, আগামী ৩০ ডিসেম্বর সকালে প্রত্যেকে পরিবারের সকল সদস্যকে সাথে নিয়ে কষ্ট করে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। যারা ছাত্র-যুবক আছেন তারা ভোট গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভোট কেন্দ্র পাহারা দেবেন যাতে আপনাদের দেওয়া ভোট চুরি করে কেউ ফলাফল পাল্টিয়ে দিতে না পারে। প্রচারণায় নামার পর থেকেই নিয়মিত হামলা ও বাধা দেওয়ার অভিযোগ করে আসছিলেন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা। অধিকাংশ প্রার্থী নিজেই হামলায় আহত হওয়ার অভিযোগ করেছেন। সংবাদ সম্মেলন করে তুলে ধরেছেন হামলা ও বাধা দেওয়ার অভিযোগ। একই সাথে নির্বাচন কমিশনে এসব অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা পাননি বলে জানিয়েছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে ভোটের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। ভোটের মাঠে জয়ের স্বপ্নও দেখছেন তারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম-১১ পতেঙ্গা আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকলেও শত প্রতিকূল ও বৈরি পরিবেশের মধ্যেও বিএনপি নির্বাচন করছে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার জন্য। প্রচারণার শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের উপর হামলা, সমর্থকদের গায়েবী মামলা ও গ্রেপ্তার করে এক প্রকার মাঠছাড়া করে দিয়েছে। এরপরও বিএনপি নির্বাচনে আছে এবং শেষ পর্যন্ত থাকবে। দেশের গণতান্ত্রিক শাসন মানুষের সাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, জবাবদিহিমূলক শাসন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, সরকার নির্বাচনকে এক তরফা ও প্রতিদ্বন্দ্বীতাহীন করে তুলেছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। এরপরও এদেশের জনগণ ভোট প্রদানের জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। তারা তাদের নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে চায়। জনগণের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কোন ধরনের হুমকি এবং গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে কেন্দ্রে যেতে হবে। নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে দুঃশাসন দূর করতে হবে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।
চট্টগ্রাম-৫ হাটহাজারী আসনের ধানের শীষের প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতিক বলেন, নির্বাচনের কোনো ধরনের পরিবেশ বর্তমানে মাঠে নেই। নিয়মিত আমাদের হামলা-মামলা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি করা হচ্ছে। আমার উপর হামলা হয়েছে। এরপরও ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা ভোটে আছি, থাকবো।
রাঙ্গুনিয়া আসনের ধানের শীষের প্রার্থী মো. নুরুল আলম বলেন, আমার ভোটারদের প্রতিনিয়ত পুুলিশ হুমকি. বাড়ি বাড়ি গিয়ে আক্রমণ করছে। আওয়ামী লীগের লোকজন ঘরের দরজা পর্যন্ত ভেঙে ফেলেছে। আমরা মাঠ ছাড়ি নাই। ৩০ তারিখ সবাই ভোট কেন্দ্রে আসবে। সবাই ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ার মাধ্যমে নিরব ভোট বিপ্লব ঘটাবে।
এদিকে সবকিছুর অবসান ঘটতে যাচ্ছে আগামীকাল। এতোদিনের অভিযোগের পর ভোটের মাঠে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের অবস্থান কি হবে সেটা আগামীকাল দেখা যাবে। মাঠ দখলে বিএনপি কি কৌশল দেখায় সেটার দিকে যথেষ্ট আগ্রহ আছে ভোটারদের।