সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি

36

একাদশ সংসদে সরাসরি ভোটের আসনে নির্বাচনের পর এবার সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। এজন্য মনোনয়নপত্রও ছাপানো হয়েছে।
বাংলাদেশে ৩৫০ আসনের সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ৫০টি। সংসদের নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবিতে নারী সংগঠনগুলো সরব হলেও তা এখনও উপেক্ষিত রয়ে গেছে। খবর বিডিনিউজের
বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, সরাসরি ভোটে জয়ী দলগুলোর আসন সংখ্যার অনুপাতে নারী আসন বণ্টন করা হয়। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে এবার আওয়ামী লীগ ৪৩টি, জাতীয় পার্টি ৪টি, বিএনপি ১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জোটভুক্ত হয়ে ১টি সংরক্ষিত আসন পেতে পারে।
একাদশ সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ বুধবার তার দলের চারজন প্রার্থীর তালিকা স্পিকারের কাছে পাঠিয়েছেন।
সংসদ নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনও প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান।
তিনি বলেন, “প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে কমিশন সভায় ভোটের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।”
একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে আগামী ৩০ জানুয়ারি। কাজ দ্রুত শেষ হলে এ অধিবেশনেই সংরক্ষিত নারী সাংসদরা যোগ দেওয়ার সুযোগ পেতে পারেন।
৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর ২৯৮ আসনে নির্বাচিতদের নাম-ঠিকানাসহ গেজেট প্রকাশিত হয়েছে ১ জানুয়ারি। স্থগিত থাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের ফলও বুধবার এসে গেছে। এক প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে আটকে যাওয়া গাইবান্ধা-৩ আসনের ভোট হবে ২৭ জানুয়ারি।
গেজেটের ২৯৮ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৫৭টি, জাতীয় পার্টি ২২টি, বিএনপি ৬টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি, জাসদ ২টি, গণফোরাম ২টি, বিকল্পধারা ২টি, তরিকত ফেডারেশন ১টি, জেপি ১টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৩টি আসনে জিতেছে। তবে নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরামের নির্বাচিত সদস্যরা এখনও শপথ নেননি।
জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত মহিলা আসন) নির্বাচন আইন ২০০৪ অনুযায়ী, গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনের জন্য ইসি দল ও জোটওয়ারি তালিকা তৈরি করবে এবং ভোটার তালিকা টানিয়ে দেবে। তফসিল ঘোষণার আগে প্রকাশ করা হবে ভোটার তালিকা।
আইন অনুযায়ী, সংসদের সাধারণ আসনে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসাবে শপথগ্রহণকারী ব্যক্তিরাই সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনে ভোটার হবেন। দল বা জোটে যোগ দেওয়ার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোকে চিঠিও দেবে ইসি সচিবালয়।
ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান জানান, কমিশন সভায় সংরক্ষিত নারী আসনের ভোটের তফসিল ঘোষণার আগে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেবেন।
সংরক্ষিত নারী আসনের ভোটের জন্য নির্বাচন কমিশনেই রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই, প্রত্যাহার ও ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
এই ভোটের জন্য একটি দিন রাখা হলেও ফল জানা যায় আগেই। ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনের বিপরীতে সচরাচর দল ও জোটগতভাবে সমান সংখ্যক প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয় বলে ভোটাভুটির প্রয়োজন পড়ে না। প্রত্যাহারের সময়সীমা পার হওয়ার দিনই তাদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। শপথ গ্রহণের পর ৩ কার্যদিবসের মধ্যে ইসি সচিবালয় সংসদ সদস্যদের তালিকা প্রস্তুত করে সংসদ সচিবালয়ে পাঠায়।