সংকট নিরসনে রেলে যুক্ত হচ্ছে ২৫০ নতুন কোচ

151

সংকট নিরসন হচ্ছে রেল কোচের। বাড়বে ট্রেনের সংখ্যাও। আমদানি করা হচ্ছে ২৫০ নতুন কোচ। চলতি মাসে এসব কোচ আমদানি শুরু হবে। প্রথম পর্যায়ে আসবে ৫০টি। বাকিগুলো ধাপে ধাপে আসবে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে নতুন কোচ আসার কথা ছিল। ডিসেম্বরের মধ্যে ১৫টি এবং চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রæয়ারির মধ্যে ব্রডগেজ কোচগুলো বাংলাদেশে আসার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এক মাস বিলম্বে এসব কোচ সরবরাহ শুরু করতে যাচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার কোম্পানি।
সূত্র জানায়, ২০০টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ কোচের রেক সাজাতে এরই মধ্যে একটি প্রস্তাব দিয়েছে রেলের পরিবহন বিভাগ। আগের কোচগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে আমদানি করা এমজি কোচগুলো পূর্বাঞ্চল রেলের বেশকিছু আন্তঃনগর ট্রেনে সংযোজনের পরিকল্পনা করছে রেলওয়ে। এর মধ্যে বিজয় এক্সপ্রেস, পাহাড়িকা, উদয়ন, উপকূল, সুবর্ণ, চট্টলা, যমুনা, উপবন, জয়ন্তিকা ট্রেনের রেকগুলো নতুন কোচ দিয়ে সাজানো হবে। বর্তমানে চট্টলাসহ রেলের বেশ কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন দ্বিতীয় শ্রেণির কোচ দিয়ে চলাচল করে। চট্টগ্রাম-সিলেট ও ঢাকা-সিলেট রুটের ট্রেনগুলোর কোচও পুরনো। নতুন ক্রয় করা কোচ দিয়ে পুরনো রেক সাজানো হবে।
জানা যায়, গত ২১ নভেম্বর ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উৎপাদনকারী কোম্পানি পিটিইনকার কারখানা পরিদর্শন করেন। আটদিনের ওই সফরে বিভিন্ন টাইপের কোচের নকশা ও প্রশস্তকৃত একটি করে কোচ পরীক্ষা করে তারা চূড়ান্ত অনুমোদন দেন। বিশেষজ্ঞ রিপোর্টের পরই চাহিদা মোতাবেক কোচগুলো তৈরি করে কোম্পানি।
রেল সূত্র অনুযায়ী, ২৫০টি কোচ আমদানিতে মোট ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) দিচ্ছে ১ হাজার কোটি ৮৬ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার ব্যয় করছে ৩৭৪ কোটি টাকা। প্রতিটি কোচের দাম পড়েছে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা। রেলওয়ের মহাপরিচালক কাজী রফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, রেলের নতুন আড়াইশ কোচ আনার সকল প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে কোচ আসা শুরু হবে। প্রথমে ৫০টি ব্রডগেজ কোচ আসবে। পরে আসবে ২০০ মিটার গেজ কোচ।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে ৫০টি কোচ দেশে আসা শুরু করবে। এগুলো সবই ব্রডগেজ। বাকি ২০০ কোচ মিটারগেজ। এগুলো আসতে শুরু করবে এপ্রিল থেকে। সব কোচ আসা শেষ হলে ট্রেনের সংখ্যাও বাড়বে। পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল এ দু’টি অঞ্চলেই বাড়বে ট্রেনের সংখ্যা।
রেলওয়ের জন্য মিটারগেজ ও ব্রডগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্পের অধীনে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত রেল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পিটিইনকা থেকে এসব কোচ কেনা হচ্ছে। জানুয়ারির শেষ দিকে ১৫টি কোচ সরবরাহ করবে। এরপর ফেব্রæয়ারিতে ১৮টি কোচ এবং তৃতীয় চালানে মার্চে ১৭টি কোচ সরবরাহ করবে। এপ্রিল থেকে ধারাবাহিকভাবে ২০০টি মিটারগেজ কোচ আসবে। প্রতিটি চালানে ২২টি করে কোচ আসবে বাংলাদেশে। এভাবে ২০২০ সালের মে মাসের মধ্যে সব কোচ বাংলাদেশে চলে আসবে।
প্রকল্প পরিচালক ও রেলের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (উন্নয়ন) হারুন-অর-রশীদ জানান, রেলের ব্যাপক উন্নয়ন হলেও কোচ সংকট ছিল তীব্র। ২৫০টি কোচ আমদানি করা হলে কোচ সংকট আর থাকবে না। জানুয়ারি থেকে কোচ আসা শুরু হবে। মে মাসের মধ্যেই কোচ রেলের বহরে যুক্ত হবে। ২৫০টি কোচ বাংলাদেশে এলে বাংলাদেশ রেলওয়ে আগের চেয়ে অনেক সমৃদ্ধ হবে বলে আশা করছেন তিনি।