শ্রমজীবী-কর্মহীন মানুষের খাদ্য সহায়তায় পুলিশ

39

বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনার প্রাদুর্ভাবে জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু সাময়িকভাবে বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। দিনের রোজগারে পরিবারের ব্যয় সামলানো শ্রমজীবী ও কর্মহীন এসব অসহায় মানুষের দুর্দশা লাঘবে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। গতকাল সোমবার থেকে নগরী ও জেলায় খেটে খাওয়া অসহায় মানুষের হাতে বিনামূল্যে চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপণ্য তুলে দিচ্ছে পুলিশ।
এর আগে জনসমাগম এড়িয়ে মানুষের ঘরে অবস্থানকালীন সময়ে বাইরে বেরোনো নিরুৎসাহিত করতে নগর পুলিশ‘ডোর টু ডোর শপ’ কার্যক্রম চালু করে। প্রথম দিন আট থানায় কর্যক্রম শুরুর পর গতকাল সোমবার ১৬ থানাতেই তা বিস্তৃত করা হয়েছে। ঘরে অবস্থানকালীন যে কোনো নাগরিক নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও জীবণরক্ষাকারী ওষুধের জন্য সিএমপির হটলাইন নম্বর ০১৪০০০৪০০৪০০- এ কল করলে নির্ধারিত মূল্যের বিনিময়ে সেসব পণ্য পুলিশই ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে। এছাড়া, যে কোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ ও সেবা নিশ্চিতে কুইক রেসপন্স টিমও করা হয়েছে।
আগের দিন বিকালে উত্তর জোনে বিনামূল্যে অসহায়দের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি শুরুর পর গতকাল সোমবার দুপুরে নগরের লাভলেইন এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে দক্ষিণ জোনে তিন হাজার অসহায় খেটে খাওয়া পরিবারের মাঝে নিত্যপণ্য বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান। পরে সিএমপি কমিশনার উপস্থিত কয়েকটি পরিবারের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন। এসব খাদ্য সামগ্রীর প্রতিটি প্যাকেটে ১০ কেজি করে চাল, তিন কেজি আলু, দুই কেজি ডাল, দেড় কেজি রসুন ও পেঁয়াজ, আধা কেজি লবণ, এক লিটার সয়াবিন তেল ও একটি করে সাবান রয়েছে।
সিএমপির উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদী হাসান জানান, প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ জোনের আওতাধীন চার থানায় মোট তিন হাজার অসহায় পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সোমবার থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে তিনি জানান।
অপরদিকে, কর্মহীন দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষের পরিবারের মাঝে একইদিন বিনামূল্যে নিত্যপণ্য বিতরণ শুরু করেছে জেলা পুলিশ। সোমবার দু’হাজার পরিবারের মধ্যে পাঁচ কেজি করে চাল, দুই কেজি আটা, এক কেজি ডাল, এক কেজি লবণ সম্বলিত প্যাকেট বিতরণের জন্য জেলার ১৬টি থানা এলাকার অফিসার ইনচার্জ এর কাছে পাঠানো হয়েছে। কর্মসূচির শুরুর দিন সোমবার সকালে আনোয়ারা থানাধীন গুচ্ছগ্রাম এলাকায় জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম রশিদুল হক নিজে উপস্থিত হয়ে ৭০ অসহায় পরিবারের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন। এরপর তিনি পটিয়ায় যান।
এসপি এসএম রশিদুল হক জানান, প্রথমদিন ১৬ থানায় দুই হাজার পরিবারের মধ্যে বিনামুল্যে এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। কাজের পরিবেশ স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।
পুলিশ সুপার ছাড়াও জেলার অন্যান্য এলাকায় অসহায় মানুষের বাড়িতে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) একেএম এমরান ভূঞা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মো. মশিউদ্দৌলা রেজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. জাহাঙ্গীরসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।