শোকাবহ আগস্ট

3

পূর্বদেশ ডেস্ক

বাংলাদেশের আরেক নাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার স্বপ্নের ফসল এদেশ, তাকে নিয়ে এমন কথা বলাই যায়। তার স্বপ্নে ভর করেই নিরস্ত্র বাঙালি জাতি হিংস্র পাকিস্তানি বাহিনীর বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে আনতে পেরেছিল। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের শক্তিই গোটা জাতিকে একত্রিত করেছিল।
আসলে মুক্ত বিহঙ্গের মত জীবনযাপনের স্বপ্ন বাঙালি জাতির মধ্যে অনেক আগে থেকেই সুপ্তভাবে বাস করতো। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তা বেগ পায়। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ নিয়ে তার একান্ত স্বপ্নের কথা সাহসের সঙ্গে, আস্থার সঙ্গে, বিশ্বাসের সঙ্গে উচ্চারণ করেছেন বাংলাদেশের অভ্যুদয় লগ্নেরও বহু আগ থেকে। ১৯৪৭ সাল থেকেই তিনি বাংলাদেশকে পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন।
বঙ্গবন্ধ শুধু কি একটি স্বাধীন দেশই চেয়েছিলেন? বঙ্গবন্ধুর চাওয়া ছিল কতটুকু? কেমন বাংলাদেশ চাই প্রসঙ্গে ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ প্রথম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বেতার ও টিভি ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমার সরকার অভ্যন্তরীণ সমাজ বিপ্লবে বিশ্বাস করে। এটা কোন অগণতান্ত্রিক কথা নয়।একটি নতুন ব্যবস্থার ভিত রচনার জন্য পুরাতন সমাজব্যবস্থা উপড়ে ফেলতে হবে। আমরা শোষণমুক্ত সমাজ গড়বো।’
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল দুঃখী বাঙালির মুখে হাসি ফোটানো। তার আকাক্সক্ষা ছিল শোষণহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার। স্বপ্ন দেখেছেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশের। অসাম্প্রদায়িক চেতনা ছিল তার মজ্জাগত। মানবিক চেতনায় তিনি সর্বদা সজাগ ছিলেন। তিনি ছিলেন বাঙালির ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির ধারক। সেই স্বপ্ন পূরণে ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে একটি শোষণহীন সমাজভিত্তিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে বঙ্গবন্ধু সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। একইসঙ্গে চেষ্টা করেছেন সকল দ্ব›দ্ব ভুলে সম্মিলিতভাবে এক কাতারে দাঁড়িয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়তে। কিন্তু হায়েনাদের রক্ত-পিপাসা তা থমকে দিয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোররাতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে হামলে পড়ে শকুনের দল। তারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। থামিয়ে দেয় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কাযক্রম, অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা।