শুধু রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ভিভিআইপি

37

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। একজন যুগ্ম সচিবের অপেক্ষায় ফেরি আটকে রাখায় মাদারীপুরে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে শুনানিতে হাইকোর্ট এ মন্তব্য করেন। এ ঘটনায় ভিআইপি প্রসঙ্গে হাইকোর্ট আরও বলেন, এরা ভিআইপি নন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী।
গতকাল বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিটের ওপর শুনানি নিয়ে এ মন্তব্য করেন।
শুনানিতে হাইকোর্ট আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয় থাকে, সেটি বিবেচনা করতে হয়। পরে হাইকোর্ট অতিরিক্ত সচিবের নিচে নন, এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে এ ঘটনার তদন্ত করতে জনপ্রশাসন সচিবের প্রতি নির্দেশ দেন। তদন্ত প্রতিবেদন তিন সপ্তাহের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ১ নম্বর ফেরিঘাটে যুগ্ম সচিবের অপেক্ষায় প্রায় তিন ঘণ্টা ফেরি না ছাড়ায় স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুতে তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে গত মঙ্গলবার রিট হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে সরকারের যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মন্ডলের গাড়ির অপেক্ষায় প্রায় তিন ঘণ্টা ফেরি বসে থাকায় ঘাটে আটকে পড়া অ্যাম্বুলেন্সে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার চার দিন পর বিষয়টি জানাজানি হলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিতাসের মৃত্যু নিয়ে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারিত হয়।

জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলা
খালেদা জিয়ার
জামিন আবেদন
খারিজ
জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দন্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন নাকচ করেছে হাই কোর্ট।
টানা দুই দিন শুনানি নিয়ে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার আবেদনটি খারিজ করে দেয়। তলবের দুই মাসের মধ্যে গত ২০ জুন এ মামলার রেকর্ড (মূল নথি) হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা পড়লে গত ২৩ জুন নথিভুক্ত জামিন আবেদনটি উপস্থাপন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। এরপর মঙ্গলবার আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়। গতকাল বুধবার খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও দুদকের আইনজীবীর বক্তব্য শোনে আদালত।খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন ও মাহবুবউদ্দিন খোকন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। খবর বিডিনিউজের
অপরাধের গুরুত্ব, সংশ্লিষ্ট আইনের সর্বোচ্চ সাজা এবং বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদাসহ অন্য আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত- এ তিনটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আবেদনটি সরাসরি খারিজ করা হয়েছে বলে অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন।
জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের নামে আসা প্রায় সোয়া ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ চার আসামির সবাইকে সাত বছর করে সশ্রম কারাদন্ড দিয়ে গত বছর ২৯ অক্টোবর রায় দেয় বিচারিক আদালত।
পাশাপাশি তাদের ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়। আর ট্রাস্টের নামে কেনা কাকরাইলের ৪২ কাঠা জমি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়।
ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আখতারুজ্জামান এ মামলার রায় ঘোষণা করেছিলেন। রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি হাতে পাওয়ার চার দিন পর গত বছর ১৮ নভেম্বর খালেদার দন্ড বাতিল ও খালাস চেয়ে হাই কোর্টে আপিল করেন তার আইনজীবীরা।
৬৩৮ পৃষ্ঠার মূল রায়সহ প্রায় ৭০০ পৃষ্ঠার এই আপিলের সঙ্গে হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদার জামিন আবেদনও করা হয়। গত ৩০ এপ্রিল ওই আপিল আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাই কোর্ট। সেদিন বিচারিক আদালতের রায়ে দেওয়া অর্থদন্ড স্থগিত এবং সম্পত্তি জব্দের আদেশে স্থিতাবস্থা দেওয়ার পাশাপাশি খালেদার জামিন আবেদনটি নথিভুক্ত করে মামলার নথি তলব করে হাই কোর্ট।