শিশু সাহিত্যের প্রাধান্য ‘অক্ষরবৃত্ত’ প্রকাশনে

85

২৬টি শিশু সাহিত্যসহ মোট ৫২টি বই প্রকাশ করেছে ‘অক্ষরবৃত্ত’ প্রকাশন। ছোটদের গল্প, ছড়া, কিশোর কবিতা, কিশোর উপন্যাস, গবেষণা, প্রবন্ধ, জীবনী, গান, গল্প, কবিতার বইয়ের সমাহার অক্ষরবৃত্তে। অক্ষরেই অমরত্ব-শিরোনামে এ স্টলে মিলছে বইমেলা উপলক্ষে সব বইয়ে ২৫ শতাংশ ছাড়। শিশু সাহিত্যের প্রধান্য থাকলেও সকল শ্রেণির পাঠকের আনাগোনা আছে স্টলটিতে।
অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনের উপদেষ্টা আরিফ চৌধুরী বলেন, মেলার পরিসর বেড়েছে, প্রচার প্রচারণা বেড়েছে। পাঠক-দর্শক আসছেন। সামনে আরো লোকসমাগম বাড়বে। মানুষের মাঝে বই পাড়ার আগ্রহ বেড়েছে। ডিজিটাল যুগে সবাই ফেসবুক নির্ভর হয়ে পড়ছেন। এরমধ্যেও বইমেলায় আসার হার আস্তে আস্তে বাড়ছে। বাঙালি বইপ্রেমী। যদিও সঠিকভাবে মানুষের মধ্যে সঠিক বইটি পৌঁছায় না। তবে বইয়ের ব্যাপারে কারো অনিহা নেই।
তিনি বলেন, অক্ষরবৃত্ত থেকে এবার গল্প, কবিতা, উপন্যাস, শিশু সাহিত্য, ছড়া ও আত্মজীবনীমূলক ৫২টি বই বের হয়েছে। এরমধ্যে ২৬টি বই শিশু সাহিত্য। অক্ষরবৃত্ত সবসময় শিশু সাহিত্যের প্রতি জোর দিয়ে থাকে। গতবারের মেলায় অক্ষরবৃত্ত শ্রেষ্ঠ স্টলের পুরস্কার পায়।
এবারের বইমেলা উপলক্ষে অক্ষরবৃত্ত শিশু সাহিত্য পান্ডুলিপি পুরস্কার ঘোষণা করেছে। অনেকগুলো পান্ডুলিপি থেকে সেরা ৪টিকে পূরস্কৃত করা হয়েছে। এ চারটি পান্ডুলিপি বই আকারে মেলার স্টলে আনা হয়েছে।
অক্ষরবৃত্তের স্বত্ত্বাধিকারী আনিস সুজন বলেন, বইমেলা জমে উঠেছে। ভালো বিক্রিও হচ্ছে। অক্ষরবৃত্ত থেকে এবার শিশু সাহিত্য পান্ডুলিপি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। চারটি বইকে এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
এবার অক্ষরবৃত্ত থেকে প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে রয়েছে, ছোটদের গল্পে রফিকুর রশিদ এর মুক্তিযুদ্ধের নির্বাচিত কিশোর গল্প, আহমেদ মাওলার পরীর পাহাড়, সুমাইয়া বরকতউল্লাহ্র দুই টুকরো ভূত, আলী আসকরের গুড্ডু গেলো পরীর দেশে, সনজিত দে এর বোকা মুরগি বুদ্ধিমান শেয়াল, ফারুক হাসানের অন্তুর ভূত দেখা, অপু বড়ুয়ার একুশ ও স্বাধীনতার গল্প, বাসুদেব খাস্তগীরের ফুলপরীদের দেশে ইশকুল নেই, তামান্না সঞ্চিতার ছোট ও ছোট জ্বীন ও মুসা আনসারীর গল্পের রসমলাই। ছড়া/কিশোর কবিতায় রয়েছে রাশেদ রউফের শ্রেষ্ঠ কিশোর কবিতা, ফারুক নেওয়াজের নাম লিখেছি পাতায় পাতায়, মিজানুর রহমান শামীমের ইরল বিরণ চিরল পাতা, জসীম মেহবুবের কাক গিয়েছে কাকির বাড়ি, সিতাংশু করের একটি গাছের গল্প, লিয়ন আজাদের মেঘের ভাঁজে রোদ, আহসানুল হকের সমকালীন ছড়া, সাজেদুল করিম ভূঁইয়ার উপচে পড়া খুশির ছড়া, এয়াকুব সৈয়দের তালপাতার বাঁশি, সাইমন নজরুলের তিড়িং বিড়িং ফড়িং, লিটন কুমার চৌধুরীর পালতোলা সাম্পান, ছালাম সৌরভের খেলায় খেলায় যায় বেলা, সাইফুল্লাহ কায়সারের পুষি নাচে তিড়িং বিড়িং, হোসাইন মোস্তফার গনেশ গেলো উল্টে, সাজিব চৌধুরীর চাঁদমুখে চাঁদহাসি, নজরুল ইসলাম মামুনের খুকুর পায়ে সোনার নূপুর এবং রামেশ্বর শীলের ছড়া ও ছন্দ। কিশোর উপন্যাসের মধ্যে আছে রমজান আলী মামুনের মিঠু তুমি স্বাধীনতা, মহিউদ্দীন চৌধুরীর জিরো খোকা হিরো। গল্পের মধ্যে ফারজানা ফাইজার নষ্ট শহরে নিষ্পাপ প্রাণ, মিনহাজুল ইসলাম মাসুমের সেøা পয়জনিং, দীপংকর গুপ্তের ফাগুনের আলিঙ্গন ও শহীদুজ্জামান তারেকের বাতাসে লাশে গন্ধ।
কবিতার মধ্যে সাইমন নজরুলের নন্দিত নরকের বন্দনা, শাহীন মাহমুদের হেম ও তস্করের পদাবলী, নীলিমা শামীমের আগুনে লেখা বসন্ত কাবিন, ওয়াজেদ পারভীন পপির অক্ষত ভালোবাসা, রঞ্চন বণিকের নোনাজলের কাব্য, দোদুল পার্থের অলক্ষ্যের চাঁদ, তানভীর হাসান বিপ্লবের ঔজ্জ্বল্য আকাশ, মির্জা মোহাম্মদ আলীর একুশ আমার বর্ণমালা, শেখ শাম্মি সকালের তুমি আমি ও শরৎ, তাপস চক্রবর্তীর ঈশ্বর সমীপেষু, সিতাংশু করের আঁধার চাতালে গলো জোছনা রাতে, সাজিব চৌধুরীর বৃষ্টি আসে দৃষ্টির সীমানায়, প্রকাশ বড়–য়ার কৃষ্ণতিথি এবং এম আদিলের লু হাওয়া।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সহায়তায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ১৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার আয়োজন করেছে। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১১০টি প্রকাশকের স্টল রয়েছে। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা এবং ছুটিরদিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।