শিশুদেরকে আনন্দময় শৈশব উপহার হতে হবে

45

নৈতিক স্কুল ও লিবারেল ফোরামের যৌথ উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধিজীবী আলী করিম স্মৃতি মেধাবৃত্তি এবং চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান গত ১৮ ফেব্রূয়ারি বিকেল ৫টায় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একামেডী মিলনাতয়নে অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. গাজী সালেহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশের খ্যাতিমান শিশু সাহিত্যিক লেখক, গবেষক, বিজ্ঞানী ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। মূখ্য আলোচক ছিলেন চারুকলা ইন্সটিটিউট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইফুল বারী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলাউদ্দিন, চবি সমাজতত্ত¡ বিভাগের অধ্যাপক মো: লিয়াকত আলী, আইন বিভাগের অধ্যাপক নির্মল কুমার, কবি ও সাহিত্যিক বাদল সৈয়দ, আসিফ ইকবাল। আবৃত্তি শিল্পী রুনা চৌধুরী ও লিপি তালুকদার পরিচালনায় এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মেধাবৃত্তি ও প্রতিযোগিতার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শ্যামল বৈদ্য সবুজ, শিক্ষক মো: মহসিন, তানভীর এহসান, রফিকুল জামান তৌহিদ, বিপ্লব।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নৈতিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা নৃত্য, সংগীত, আবৃত্তি, নাটক ও বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশনা করেন। প্রধান অতিথি ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন শিশুদেরকে আনন্দময় শৈশব নিশ্চিত করতে আমাদের অভিভাবকদের জিপিএ-৫ পাওয়ার প্রতিযোগিতা থেকে সরে আসতে হবে। শিক্ষার্থীদেরকে নানান রকম বইয়ের জগতে প্রবেশ করাতে হবে। লেখা-পড়াকে আরো বেশি গতিশীল করতে সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে ছেলে-মেয়েদের মনোযোগ বাড়াতে হবে। তিনি বলেন সব মানুুষের মনের ভিতরে একটা বাটি থাকতে হয়। যেখানে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা, সংস্কৃতিসহ সকল সৃষ্টিশীল কাজ জমা হয়। যার মনের ভিতর উক্ত বাটি না থাকে তার লেখাপড়া সহ কোন কিছু জমা হয়না।
তিনি বলেন বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত একজন শ্রোতা কখনোই একটানা ২০ মিনিটের বেশি অভ্যস্ত নয়। আগে আমি জিপিএ-৫ যারা পেত খুশি হতাম। কিন্তু এখন খুশি হইনা এ কারণে ঐ সমস্ত শিক্ষার্থীদের কষ্ট যেমন রাত জেগে পড়ালেখা করা, কোচিং গাইডের উপর নির্ভরশীলতা, খেলাধূলা, সাহিত্য, সংস্কৃতির সাথে তাদের দূরত্ব সৃষ্টি হওয়া। নানামূখী চাপে তারা স্বাভাবিক জীবন থেকে অনেকটাই দূরে। যার কারণে তাদের মধ্যে সৃষ্টিশীলতা কমে যাচ্ছে। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে সহশিক্ষা কার্যক্রমেও অধিক মননশীল হওয়ার আহব্বান জানান। নৈতিক স্কুলে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা আমাকে মুগ্ধ করেছে। পথ শিশুদের মেধা বিকাশে এই স্কুল সত্যিই প্রশংনীয় কাজ করে যাচ্ছে। আমি এ সমস্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে অসাধারণ প্রতিভার চাপ দেখতে পাচ্ছি। তাদের সুন্দর আলোকিত জীবন কামনা করছি। সভার সভাপতি বলেন নৈতিক স্কুল প্রতিষ্ঠার পিছনে রয়েছে আমরা বর্তমানে একটি বড় সমস্যায় রয়েছি। তা হচ্ছে আমাদের মাঝে নৈতিকতার অভাব। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে এদেশকে স্বাধীন করেছি। এদেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষ নৈতিকতা সম্পন্ন হয়ে শোষণহীণ আলোকিত সমাজ উপহার দেওয়ার জন্য। সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষ রাষ্ট্রের সকল সুযোগ সুবিধা সমানভাবে পাবে। তিনি নৈতিক স্কুলের পরিচালনা এবং অর্থায়ন সম্পন্ন ব্যক্তিগত বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। সভা শেষে শহীদ বুদ্ধিজীবী আলী করিম স্মৃতি মেধাবৃত্তি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল সহ অতিথিবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি