শিগগিরই জেলা উপজেলায় অ্যাকশন শুরু হবে : কাদের

21

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শুদ্ধি অভিযান প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগে কোনো চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, মাদক কারবারির ঠাঁই নেই। ঢাকায় শুদ্ধি অভিযানের যে অ্যাকশন শুরু হয়েছে, শিগগিরই তা জেলা-উপজেলা শহরেও শুরু হয়ে যাবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজের ঘরকে শাস্তি দিয়ে পরকে শেখানোর পলিসি নিয়েছেন’।
গতকাল বুধবার দুপুরে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
হলি আর্টিজান হামলা মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রতীক্ষিত এই রায়ের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকে। ওই মামলায় ৭ জনের ফাঁসির রায়ে জনজীবনে স্বস্তি এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বেড়েছে। এই রায় দেশে জঙ্গিবাদ ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকদের প্রতি এক অশনি সংকেত। এটি আমাদের ভবিষ্যৎকে নিরাপদ ও শান্তিময় রাখায় এবং স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা কায়েমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে’। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘দল ভারী করার জন্য আপনারা খারাপ লোক, সুবিধাবাদী লোকজনকে ভেড়াবেন না’। দলের ভেতরে কোন্দল করা যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ঘরের ভেতরে ঘর, মশারির ভেতরে মশারি টাঙাবেন না। নেতৃত্বে যাতে মৌসুমি পাখিরা না আসতে পারে সেদিকে নজর রাখবেন। দুর্দিনে এসব মৌসুমি নেতা হিমালয় কৈলাশ পর্বতে পালিয়ে যাবে। তখন পাঁচ হাজার ওয়াটের বাল্ব জ্বালিয়েও তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না’।
তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা এখন বিশ্বের ১০ প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়কের একজন, দুই জন সেরা প্রধানমন্ত্রীর একজন। গত ৪৪ বছরে সবচেয়ে সৎ রাজনীতিক, দক্ষ শাসক, সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী তিনি। তার কর্মী হয়ে আমরা কোনো অপকর্ম করতে পারি না। কেননা, আমাদের একটা আচরণের আবরণে ১০টি উন্নয়নের কাজ ঢেকে যাবে’। তিনি উল্লেখ করেন, বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত প্রায় সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী হওয়ার পরও তারা রেহাই পায়নি।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী সমাবেশে বক্তৃতা করেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ-দুর্নীতির মামলায় কারাগারে রয়েছেন, রাজনৈতিক কোনো মামলায় নয়। তার মুক্তির বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার। বিএনপি যদি রাজপথে আন্দোলনের নামে ভাঙচুর, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য করে, তবে তাদের অতীতের কথা স্মরণে রাখার পরামর্শ দেবো। আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা সাধারণ জনতাকে সঙ্গে নিয়ে কঠোরভাবে তা প্রতিহত করতে সর্বদা প্রস্তুত’।
দলের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজপথের আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন। তিনি স্বপ্ন দেখেন রাজপথের আন্দোলনে বেগম জিয়াকে মুক্ত করবেন। স্বপ্ন দেখা ভালো। কিন্তু যেটা দিবাস্বপ্ন সেটা স্বপ্নই থেকে যায়। যে অশুভ শক্তিকে জনগণ বিদায় করে দিয়েছে, তাদের আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া হবে না’।
উদ্বোধনী সমাবেশে আরও বক্তিতা করেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম কামাল, পারভীন জামাল কল্পনা, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি, ইসমাত আরা সাদেক এমপি, কাজী নাবিল আহমেদ এমপি, শেখ আফিল উদ্দিন এমপি, বাবু রণজিৎ রায় এমপি, মেজর জেনারেল (অব.) ডা. অধ্যাপক নাসির উদ্দিন এমপি, শাহীন চাকলাদার প্রমুখ।
এর আগে বেলুন উড়িয়ে জেলা সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য্য। উদ্বোধনী সমাবেশ শেষে ওবায়দুল কাদের একই মঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগের নয়া কমিটিতে সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে শহিদুল ইসলাম মিলন ও শাহীন চাকলাদারকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন।