শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্র চর্চা, শিক্ষকদের সহায়তা ভর্তি ও ঝরে পড়ারোধে সহযোগিতা

58

রঙিন কাগজ, বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাররা। বিদ্যালয়ের দেয়ালে লাগানো রয়েছে প্রার্থীদের পোস্টার। ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার, ভোট কেন্দ্র, নির্বাচন কমিশনার, প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং এজেন্ট সবই আছে। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাররা সারিবদ্ধভাবে ভোট দিচ্ছে। প্রার্থীরাও বিনয়ী হয়ে ভোটারদের কাছে ভোট খুঁজছেন। গত ২৩ ফেব্রূয়ারি হাটহাজারী পৌরসভার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়। জাতীয় সংসদ কিংবা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দৃশ্য নয় এটি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস কাউন্সিল নির্বাচনকে ঘিরে এই আয়োজন বলে জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরিফুল ইসলাম চৌধুরী। নির্বাচনে ভোট গ্রহণ, ভোটাধিকার প্রয়োগ ও আইনশৃঙ্খলা কাজে নিয়োজিত সবাই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এমনকি বিদেশী পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক প্রতিনিধি হিসেবেও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। শুধু এই বিদ্যালয়ে নয়, ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সারাদেশের মত উপজেলার ১৪৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এভাবেই অনুষ্ঠিত হয়েছে স্টুডেন্টস কাউন্সিল নির্বাচন। সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৪৯টি স্কুলে একযোগে গত রবিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত স্টুডেন্ট কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে এসব স্কুলের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। তাদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত ৭জন প্রতিনিধির সমন্বয়ে এক বছরের জন্য এ ছাত্রপরিষদ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গঠিত হয়। হাটহাজারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, লাইনে দাঁড়িয়ে ক্ষুদে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছে। ভোট কেন্দ্রে সার্বিক নিরাপত্তা তথা ভোট গ্রহন নিবিঘ্নে করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহীনির পাশাপাশি রয়েছে মোবাইল টিমসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ সময় স্টুডেন্টস কাউন্সিল নির্বাচন পরির্দশন করেন হাটহাজারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. সিরাজদ্দৌল্লা মেহদী, পরিষদের সদস্য প্রকৌশলী এসএম মুহিবুল হক, খোরশেদ আলম শিমুলসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সায়দা আলম জানান, অধিদফতরের নির্দেশনায় প্রতিবছরের ন্যায় এ স্টুডেন্টস কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে নির্বাচন কমিশন, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার এবং শৃঙ্খলার দায়িত্ব স্ব স্ব স্কুলের শিক্ষার্থীরাই পালন করেছে। উপজেলার প্রত্যেক স্কুলের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এদের মধ্যে থেকে ১ হাজার ৯শ ৩৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ১ হাজার ৪৩জন প্রার্থী বিজয়ী হয়। শিশুদের মাঝে গণতন্ত্র চর্চার বিকাশে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এমনটা দাবী করে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুহুল আমিন এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্রের চর্চা, অন্যের মতামতের প্রতি সহিষ্ণুতা ও শ্রদ্ধা, শিক্ষকদের সহায়তা, শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও ঝরে পড়া রোধে সহযোগিতা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কর্মকান্ডে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ, ক্রীড়া, সংস্কৃতিসহ শিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতসহ নানা বিষয়ে সম্পৃক্ত করতে এ নির্বাচন ফলপ্রসূ ভূমিকা পালন করবে।