শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সমস্যা সমাধানে সরকার আন্তরিক

90

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেছেন, প্রাথমিক শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সমস্যা সমাধানে সরকার আন্তরিক। তাদের সব সমস্যা প্রধানমন্ত্রীর নজরে রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে যা যা করা দরকার সব কিছু করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
তিনি গতকাল রবিবার সকাল ১১টায় নগরীর পিটিআই অডিটোরিয়ামে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস আয়োজিত ‘প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড হলেও জাতির মেরুদন্ড প্রাথমিক শিক্ষা। সার্বজনীন ও মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী একযোগে ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছেন। প্রাথমিক শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত সকল কর্মকর্তা, শিক্ষক ও কর্মচারীর বেতন ভাতা বৃদ্ধিসহ সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর উন্নয়ন এবং মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করেছেন। আগামীতে প্রাথমিক শিক্ষাকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টেরের পরিবর্তে বিদ্যালয়গুলোতে উন্নতমানের স্মার্ট টিভি ও স্মার্ট মোবাইল ফোন দেয়ার চিন্তা ভাবনা রয়েছে সরকারের। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হলে বিদ্যালয়ে মানসম্মত পড়ালেখার বিকল্প নেই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রাথমিক শিক্ষার ভিত আরো মজবুত করতে হবে। সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ লাগবে, সোনার মানুষ আসবে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। এজন্য প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা আরো উন্নত করতে গেলে কোথায় কি অসুবিধা আছে তা চিহ্নিত করে প্রধানমন্ত্রীর নজরে দেয়া হবে। আমরা সকলে মিলে জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নসহ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনামতে কাজ করলে প্রাথমিক শিক্ষার মান আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এলজিইডি’র এক শ্রেণির প্রকৌশলীর মাধ্যমে সরকারি অর্থায়নে সারা দেশের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নি¤œমানের সরঞ্জামাদি দিয়ে ভবন নির্মাণ কাজ করছেন ঠিকাদারেরা। ভবন নির্মাণের ১৫/২০ বছরের মধ্যে এসব ভবন পরিত্যক্ত হয়ে যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠনসহ তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখন থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর ভবন নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক কাজের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন আলাদা প্রকৌশল করতে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব প্রেরণ করা হবে। একই সাথে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের পদ-পদবি পরিবর্তন, বেতন বৈষম্য নিরসন, শিক্ষা কর্মকর্তাদের শূন্যপদ পূরণ, বিসিএস ক্যাডার থেকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে যোগ্যতা অনুযায়ী বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়সহ শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া পূরনের আশ্বাস প্রদান করেন প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। এর আগে প্রতিমন্ত্রী পাঠানটুলী খান সাহেব বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের জন্য ডিজিটাল বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতির উদ্বোধন করেন।
প্রাথমিক শিক্ষা চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক মো. সুলতান মিয়ার সভাপতিত্বে ও সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হৃষিকেশ শীলের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসরিন সুলতানা। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক শিক্ষা চট্টগ্রাম বিভাগের সহকারী পরিচালক রাশেদা বেগম, চট্টগ্রাম পিটিআই সুপার কামরুন নাহার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম (নোয়াখালী), আনোয়ার হোসেন ছিদ্দিকী (কুমিল্লা), ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন (খাগড়াছড়ি), শফিউল ইসলাম (কক্সবাজার), মো. খোরশেদ আলম (রাঙামাটি), সুব্রত কুমার বণিক (ব্রাহ্মণবাড়িয়া), আবু জাফর মো. সালেহ (ল²ীপুর), সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফিরোজ আহমদ (ফেনী), থানা শিক্ষা অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন (রাউজান), পিটিআই ইনস্ট্রাক্টর আবদুল বাতেন (চট্টগ্রাম), পিটিআই ইনস্ট্রাক্টর জাকির হোসেন (চট্টগ্রাম), সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার সখিনা বেগম (চান্দগাঁও), আশীষ কুমার আচার্য (আনোয়ারা), নিজাম উদ্দিন (রাঙ্গুনিয়া), হাসানুল কবির (ফটিকছড়ি), আশরাফুল আলম সিরাজী (হাটহাজারী) প্রমুখ।