শাপলা চত্বরের ঘটনা ইতিহাসে নতুন কারবালা

194

শাপলা চত্বর ট্রাজেডির ছয় বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। ১৩ দফা দাবিতে ২০১৩ সালে ৫ মে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে শাপলা চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে শহীদ ও আহতদের জন্য দেশবাসীর প্রতি দোয়া প্রার্থনা করেন সংগঠনটির শীর্ষ আলেমরা।
গতকাল শনিবার হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহব্বান জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, কতিপয় নাস্তিক-ব্লগার, আল্লাহ ও রাসূল, কুরআন-হাদীস অবমাননাসহ ইসলাম, মুসলমান এবং আলেম-ওলামাদের হেয়প্রতিপন্ন করার হীন চেষ্টা, মাদারিসে দীনিয়্যার বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে জাতিকে বিভক্ত করার অপতৎপরতায় লিপ্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে হেফাজতে ইসলাম এ কর্মসূচি দিয়েছিল। যা বাংলদেশের হক্কানী ওলামা-পীর-মাশায়েখ, আশেকে রাসূল (সা.) ও দেশপ্রেমিক ঈমানদার জনতার জন্য রক্তঝরা এক ঐতিহাসিক দিন। কেননা ঐদিনের ট্রাজেডি মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত মর্মন্তুদ ও বেদনাদায়ক।
হেফাজতে ইসলাম নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদিন অবরোধে অবস্থান নেয়া হেফাজত কর্মীরা যখন ক্ষুধা, পিপাসায় ক্লান্ত শরীরে হাহাকার তখন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের জন্য সরবরাহকৃত খাবার ও পানির গাড়ি বন্ধ করে, সন্ধ্যা থেকেই রাস্তার লাইট বন্ধ করে, মতিঝিলের আশপাশের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে অন্ধকার তৈরি করে ইতিহাসের বর্বরোচিত হত্যাকান্ড চালিয়েছে নিরস্ত্র ঈমানদার নবীজীর (সা.) সৈনিকদের ওপর। এই নজিরবিহীন হত্যাকান্ড ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাতে হানাদার বাহিনীর বর্বরতার চাইতেও ভয়াবহ এমনটা দাবি করে তারা বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের গণহত্যা চালিয়ে যৌথ বাহিনী ইতিহাসে এক নতুন কারবালা সৃষ্টি করেছে।
শাপলা চত্বরে যারা রক্ত দিয়েছেন, যারা আহত হয়েছেন, তারা কেবল মহান আল্লাহ ও প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর ভালবাসা নিয়ে ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন এমনটা জানিয়ে হেফাজত নেতারা বলেন, শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। হেফাজতে ইসলাম যে ১৩ দফা দাবি নিয়ে সেদিন ময়দানে নেমেছিল সে দাবি আজও পূরণ হয়নি। বরং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে ঈমানি আন্দোলন বন্ধ করার নানা চক্রান্ত অব্যাহত রয়েছে।
১৩ দফা দাবি আদায়ের ঈমানি আন্দোলনকে মঞ্জিলে মকসুদে পৌঁছানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তারা বলেন, ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক-মুরতাদদের আস্ফালন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে। কোনো আগ্রাসী অপশক্তির সামনে ওয়ারিছে আম্বিয়া আলেম সমাজ কখনোই মাথা নত করেনি। বর্তমানেও কোনো সাম্রাজ্যবাদী-ব্রাহ্মণ্যবাদী-আধিপত্যবাদী বহিঃশক্তির তোয়াক্কা করে না। ইসলাম, মুসলমান, ঈমান-আক্বিদা, তাহজীব-তমদ্দুন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি ও সামাজিক মূল্যবোধের ওপর আঘাত আসলে তারা জীবন বাজি রেখে শাহাদাতের তামান্না নিয়ে যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।