শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

16

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ ভাগে এদেশের দোসরদের সহযোগিতায় পাক হানাদার বাহিনী হত্যা করেছিল শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ হাজারো বুদ্ধিজীবীকে। সেই থেকে ১৪ ডিসেম্বর দিনটিকে জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে, পালন করে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে।
দিনটি উপলক্ষে গতকাল সোমবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম শামীম উজ জামান। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী।
এসময় বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল সামরিক কায়দায় সালাম জানায়।
অন্যবছর এদিনটিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী নিজে উপস্থিত থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেও করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়ে ভাইরাসের বিস্তার রোধে অনেক রাষ্ট্রীয় আয়োজনই সীমিত করে আনতে হচ্ছে। খবর বিডিনিউজের
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত জেনেই পাকিস্তানি বাহিনী ওই নিধনযজ্ঞ চালায়; তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর যেন বাংলাদেশ যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে- তা নিশ্চিত করা। শরীরে নিষ্ঠুর নির্যাতনের চিহ্নসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের লাশ পাওয়া যায় মিরপুর ও রায়েরবাজার এলাকায়। পরে তা বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে।
দীর্ঘ ৪৯ বছর আগে এদিনে অধ্যাপক, লেখক, কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, বিজ্ঞানীসহ দেশের বরেণ্য শত শত বুদ্ধিজীবীর তালিকা করে সে অনুযায়ী তাদের বাসা থেকে চোখ এবং দু’হাত বেঁধে বধ্য ভূমিতে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়। টর্চার সেলে নির্মম নির্যাতনে অনেকেই মৃত্যুবরণ করেন। মিরপুর, রায়েরবাজার, রাজারবাগ, মোহাম্মদপুর এবং নাখালপাড়াসহ রাজধানীর বিভিন্ন বধ্যভূমিতে তাদের হত্যা করে মৃতদেহ ফেলে রাখা হয়।
সেদিনের নিহতদের মধ্যে রয়েছেন-শিক্ষক, বাগ্মী, নট্যকার ও চিন্তাবিদ মুনীর চৌধুরী, ডা. আলিম চৌধুরী, ডা. ফজলে রাব্বি, লেখক-সাংবাদিক শহীদুল্লাহ কায়সার, সাংবাদিক সিরাজুদ্দিন হোসেন, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, নিজামুদ্দিন আহমেদ, এসএ মান্নান, সেলিনা পারভীনসহ আরো অসংখ্য জন। সেদিনের সেই বর্বরতা স্মরণ করে সমগ্র জাতি দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।