শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের আমানত কমেছে ২০ শতাংশ

55

দেশে কার্যরত শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর আমানত আগের তিনমাসের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে। নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত ঋণ বিতরণের কারণে আমানত কমে গেছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, শরিয়াহভিত্তিক সবচেয়ে বড় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের জুলাইয়ে আমানতের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩শ’ ৭ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে আমানত দাঁড়িয়েছে ৯শ’ ৪৭ কোটি টাকায়।
একইভাবে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের আমানত ১ হাজার ২শ’ ৭৮ কোটি টাকা থেকে ১ হাজার ৭ কোটি, এক্সিম ব্যাংকের ৭শ’ ২০ কোটি টাকা থেকে ৪শ’ ৫১ কোটি, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ৬শ’ ৯১ কোটি টাকা থেকে ৫শ’ ৫৯ কোটি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৪শ’ ৯৩ কোটি থেকে ১শ’ ২৯ কোটি, ইউনিয়ন ব্যাংকের আমানত ১শ’ ৯৯ কোটি থেকে ৫৮ কোটিতে নেমেছে।
একই সময়ে ১৩ কোটি টাকা অপরিবর্তিত রয়েছে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের আমানত। তবে ৮৩ কোটি টাকা বেড়েছে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের আমানত। সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকটির আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৬ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের তিন মাসের তুলনায় ইসলামী ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে ৫ হাজার ২শ’ ২ কোটি টাকা বা ১৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এসব ব্যাংকের মধ্যে পাঁচটি ব্যাংক জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ-আমানতের অনুমোদিত সীমা ৯০ শতাংশ অতিক্রম করে ৭ শতাংশ বেশি ঋণ বিতরণ করেছে।
এ বিষয়ে শরিয়াহভিত্তিক এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া বলেন, অতিরিক্ত বিনিয়োগের কারণে আমানত কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ-আমানত অনুপাত সীমা চলতি বছরের মার্চ থেকে ৮৯ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংক কখনো আমানত সংকটে পড়েনি। বরং অতিরিক্ত আমানত থাকার পর আমরা সরকারি ট্রেজারি বিল এবং বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারি না।
২০১৮ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বলা হয়েছে, ইসলামী ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ ১৪ শতাংশ বেড়েছে। টাকার হিসাবে ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ২০ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। একই সময়ে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২৭ হাজার ৮১৪ কোটি টাকা। বেড়েছে ১১ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর শেষে শরিয়াহভিত্তিক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের কাছে আমানতের সবচেয়ে বড় অংশ রয়েছে। এর পরিমাণ মোট আমানতের ৩৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। ব্যাংকটির অতিরিক্ত আমানত রয়েছে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ বা ৯শ’ ৪৭ কোটি টাকা।
দেশে আটটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংক ছাড়াও নয়টি প্রচলিত ব্যাংকের ১৯ ইসলামিক ব্যাংকিং শাখা এবং সাতটি প্রচলিত ব্যাংকের ২৫ ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডো রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, এবছরের মার্চ মাসের মধ্যে ব্যাংকগুলোর ঋণ ও আমানত সীমা ৮৯ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সীমার মধ্যে নেমে এলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।