শব্দেরা জাগে লোবানের ঘ্রাণে

108

আমার উন্মিলিত শব্দমালা জাগে অহোরাত্রি,
এতো অন্ধকার আলোয়, জাগে জোছনা ফোটা পূর্ণিমাতে,
জাগে শব্দেরা অলীক দুপুর রৌদ্রে
নিরাকার আকাশের তারায়,
জাগে নদীর নিরবধী ঢেউ খেলা জলে
মাছরাঙার ঠোঁটে ধরা শিকারী চোখে
দুটি পাখির ঠোঁটের আদরের মোহন সৌন্দর্য্য
শব্দেরা জাগে নারীর সৌন্দয্যলোকে
আর এলো চুলের ভাঁজ খোলা করতলে
নৌকার বৈঠার ছল্যাৎ ছল্যাৎ ছন্দের তালে
অভিমান ভরা ফুটফুটে চাঁদের জোছনায়।
বাঁশঝাড়ের শব্দের বাতাসে
পুকুরের টুপ করা শব্দে, অন্তহীন জোছনায়,
বৃষ্টি ভেজা নারীর শাড়ির ভাঁজের রঙিন লাজে
মায়াবী পর্দার দুলে উঠা হাওয়ায় হাওয়ায়।
শব্দেরা জাগে ডয়িংরুমের নি:সঙ্গ পিয়ানোর শব্দে
গভীর রাতে বেজে ওঠা রবীন্দ্রনাথের প্রেমের সংগীতে
শব্দেরা জাগে উতলা দুপুরে মাতাল বসন্তে
শীতার্ত রত্রির ওম ধরা বেলায়, চন্দ্রালোকের চাঁদ রাত্রির খেলায়,
বিষন্ন দুপুরে বন হরিণীর ডাকে, নি:স্তব্দ ছায়ায় পাতা ঝরার ছন্দে
শব্দেরা জাগে ভাবনার বিষন্ন বোধে, আকাশের অসীম শূন্যতায়,
কবিতা পড়ার প্রহরে প্রহরে ,ভালবাসার অনন্দ বেদনায়,
শব্দেরা জেগে উঠে লোবানের ঘ্রাণে সমুদ্রের বালুকা বেলায়।

মোহময়ী
চৌধুরী শাহজাহান

জমানো বন্ধু আড্ডায় হঠাৎ এসে হৈ চৈ করে তুমি বললে,
-এক্ষুনি চলো আমার সাথে
আমি বললাম,
কোথায়?
-যেখানে আমার হৃদয়-দুচোখ শান্তি খুঁজে পায়
কতক্ষণ থাকবে?
-অনন্তকাল।
আমি হেসে বললাম,
পাগলামি করো না।
আমি তো মার্কেজ নই যে যখন তখন যে কোনো বয়সে
প্রেমে-অভিসারে ছলাকলায় ইশারায় হাবুডুবু খাবো।
-তাতে কি; তোমায় আমি খুব মিস করি ‘স¤্রাট’
তোমার জন্য আমি যদি সব ছাড়তে পারি
তুমি পারবে না?
আমি বললাম,
‘নক্ষত্র’, এটা ভালোবাসা নয়, মোহ।
বলো, মোহ কি কখনো ভালোবাসা হতে পারে?
-কে বলেছে মোহ থেকে প্রেম হয় না?
হ্যাঁ, মোহ থেকে জন্ম নেয় গভীর ভালোবাসা, অতল প্রেম।

চকিত সিদ্ধান্তে মনোহরণী-অভিসারিকাকে বলি,
চলো মোহময়ী,
আমরা দুজন ওই দিগন্তে মিলিয়ে যাই
মহাকালকে সাক্ষী রেখে
পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ
যেখানে এ মন যেতে পায়।