শত্রুর বাড়িতে পাঠানো হল চোর

33

নগরীর একটি বাসায় চুরির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, আর্থিক কারণে সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় ব্যবসায়িক অংশীদারের বাসায় চোর পাঠিয়েছিল অন্য দুই বন্ধু। নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নগর গোয়েন্দা ও বন্দর থানা পুলিশের সদস্যরা এই চুরির ঘটনায় দুই পরিকল্পনাকারীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন- সুলতান আরেফীন জীবন (২৮), সাজ্জাদ হোসেন টিপু (৩২), মো. ইসমাইল হোসেন (৩২), মো. শরীফ (৩৮), জেসমিন আক্তার (৩৫) ও রেহেনা আক্তার (৩২)।
বন্দর থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্ত্তী জানান, গত ২০ আগস্ট ইফতেখার হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী তার বাসায় চুরির অভিযোগ করেন। গোসাইলডাঙ্গা ফকির হাট সড়কের মজিদ ম্যানসনের দ্বিতীয় তলার বাসায় জানালার গ্রিল ভেঙে চোরের দল ঢুকে নগদ ও স্বর্ণালঙ্কারসহ ৩৯ লাখ ৭০ হাজার টাকার মালামাল চুরি করে।
অভিযোগ পাওয়ার পর বন্দর থানা পুলিশ গোয়েন্দা পুলিশের সাথে যৌথ অভিযান শুরু করি। বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তারের পর নগদ চার লাথ ৩০ হাজার টাকা ও আট ভরির বেশি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়।
ওসি সুকান্ত বলেন, গ্রেপ্তারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারি চট্টগ্রাম-১০ আসনের সাংসদ এম এ লতিফের ভাতিজা ব্যবসায়ী ইফতেখারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জীবন ও টিপু বিদেশ থেকে বিভিন্ন মালামাল আমদানি করে বিক্রি করতেন। ইফতেখারের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে টাকা নিয়ে তা পরিশোধ করতে না পারায় তাদের মধ্যে মনমালিন্য হয়। খবর বিডিনিউজের
মনমালিন্যর জেরে তারা ইফতেখারের বাসায় চুরির সিদ্ধান্ত নেন এবং তাদের পূর্ব পরিচিত ইসমাইলের সাথে বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ করেন। তখন ইসমাইল তাদেরকে শরীফ ও আমির নামে দুই চোরের সন্ধান দেন।
ওসি বলেন, গত ১৮ আগস্ট ইফতেখার পরিবার নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে যাওয়ায় জীবন ও টিপু ওই সময়কে চুরির জন্য বেছে নিয়ে শরীফ ও আমিরকে জানান।
শরীফ ও আমির ১৯ তারিখ ভোর রাতে জানালার গ্রিল বাঁকা করে বাসাটিতে প্রবেশ করে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ বেশকিছু মালামাল চুরি করে। তবে তারা কী পরিমাণ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার চুরি করেছে, তার সঠিক হিসেব না জানিয়ে জীবন, টিপু ও ইসমাইলকে কিছু টাকা দিয়ে এবং গোপনে স্বর্ণালঙ্কারগুলো নিজেদের কাছে রেখে দেয়।
তিনি বলেন, অভিযানে জীবন, টিপু, ইসমাইল ও শরীফের কাছ থেকে টাকা এবং আমিরের দুই স্ত্রী জেসমিন ও রেহেনার কাছ থেকে বিভিন্ন ধরেনের আট ভরি নয় আনা চার রত্তি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বন্দর থানার এসআই রবিউল হোসেন জানান, শরীফকে গ্রেপ্তার করা গেলেও আমিরকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তাকে গ্রেপ্তার করা গেলে আরও মালামাল উদ্ধার হবে।
এদিকে গ্রেপ্তার ছয়জনকে গতকাল রোববার আদালতে পাঠানো হলে শরীফ মহানগর হাকিম আবু সালেম মো. নোমানের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আর জীবন, টিপু ও ইসমাইলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ রিমান্ড আবেদন করা হবে বলে জানান এসআই রবিউল।